সংলাপের ব্যাপারে সরকারের আপত্তি নেই, তবে কার সঙ্গে সংলাপ হবে, সেই প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে এবং তারা এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে চায়।
তিনি বলেন, আমরা যে গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু করেছি তা অব্যাহত রাখতে সংলাপের প্রয়োজন হলে আমরা তা করবো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কার সঙ্গে এই সংলাপ হবে।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মধ্যে সংলাপে ওয়াশিংটনের উদ্যোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই স্বাধীন দেশ, আমাদের গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। আপনি যা বলতে চান তা বলতে পারেন। আমরা খুবই বাস্তববাদী একটি দেশ। ভালো পরামর্শ থাকলে আমরা তা সংশোধনের চেষ্টা করি।’
তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের কথাও উল্লেখ করেন।
মোমেন সাংবাদিকদের যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তারা কী চায় তা জানতে প্রশ্ন করার পরামর্শ দেন।
ভারতের সাম্প্রতিক মন্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ এবং তাদের পরিপক্ক সরকার রয়েছে এবং ভারত যা বলে তাতে বাংলাদেশের কোনো দ্বিমত নেই।
নির্বাচন কমিশন আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং শিগগিরই তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনকে সমর্থন করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সোমবার(১৩ নভেম্বর) নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মনে করি বাংলাদেশের সরকারের ভবিষ্যত তার জনগণের মাধ্যমে নির্ধারিত হওয়া উচিত।’
মিলার বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষকে নেয় না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি রাজনৈতিক দলকে অন্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে বেশি সমর্থন করি না। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি।’
মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমাকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাংবাদিকের প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাই এবং আমি তা করা থেকে বিরত থাকব।’
সোমবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, যে-ই করুক না কেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের তিনটি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট দলগুলোর মুখপাত্র তা জানতে পারবেন।
এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে জানিয়েছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দল বিএনপির দাবি ‘সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও অবৈধ’।
বাংলাদেশের স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম