ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিএসএফ’র ছোঁড়া স্টান গ্রেনেডের আঘাতে আহত বাংলাদেশি শিশু রমজান আলী (১০) এখন ভারতের দিনহাটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাবা-মা জানে না তাদের সন্তানের অবস্থা। অপরদিকে আহত রমজান আলীও জানে না বাবা-মায়ের ভাগ্যে কি জুটেছে। এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা রমজান বাড়ি ফেরার আঁকুতি জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।
ভারতের কোচবিহার জেলার বিশিষ্ট সাংবাদিক খাজা মাইনুদ্দিন চিশতীর এক প্রতিবেদনে শিশু রমজান আলীর বিষয়টি সকলের নজরে আসে। তিনি জানান, গত ১৭ মে কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার ২ নম্বর ব্লক দিয়ে বাংলাদেশের খুলনা জেলার বাগেরহাটের রায়ান্দা শরণখোলার উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের বাসিন্দা মুনির শরীফ, তার স্ত্রী ও ছেলে রমজান আলীসহ ১০-১৫ জনের একটি দল কাজ শেষে অবৈধভাবে দালালের মাধ্যমে গোপনে বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল। এসময় বিএসএফ টহলদল বিষয়টি টের পেয়ে স্টান গ্রেনেড ছুঁড়ে । এসময় স্টান গ্রেনেড রমজান আলীর শরীরের উপর এসে পরলে তার পাজরে ও পেটে আঘাত লাগে। অপরদিকে রমজান আলীর বাবা-মা ও অন্যান্যরা কাটাতারের বেড়া টপকিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। পরে বিএসএফ আহত শিশুটিকে উদ্ধার করে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সে ভারতীয় পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
শিশু রমজান আলী জানায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজের সন্ধানে তারা ভারতে যায়। এরপর তার বাবা শরীফ মুনির বেঙ্গালুরুতে কাজ পেয়ে সেখানে পরিবারসহ অবস্থান নেয়। দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থানের পর গত ১৭ মে ঝড়-বৃষ্টির রাতে দিনহাটা থানা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় রমজান আহত অবস্থায় বিএসএফ’র কাছে ধরা পরে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী ও বর্ডার ভিকটিমস রেসকিউ লিগ্যাল এসিসট্যান্স ফোরামের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস. এম আব্রাহাম লিংকন জানান, আমরা উভয় পক্ষ শিশুকে দেশে ফেরাতে ভারত সরকার, দিল্লি, কলকাতা ও আসামস্থ বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছি। এছাড়াও পশ্চিম বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ মাসুম, ভারতীয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ উভয় দেশের গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
মানবিক বিষয় বিবেচনা করে শিশুটিকে জেলে না রেখে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক