অনলাইন ডেস্ক :
টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই উইকটপতন। তাতে কী! টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং চালিয়ে গেলেন বেন ডাকেট। উপহার দিলেন ঝড়ো ফিফটি। পরে আরেকটি পঞ্চাশ ছোঁয়া আগ্রাসী ইনিংস খেললেন হ্যারি ব্রুক। তিনশ ছাড়ানো পুঁজি গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে দিল ইংল্যান্ড! ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে চাপে নিউ জিল্যান্ড। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কোচিং ও বেন স্টোকসের নেতৃত্বে টেস্টে যে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের পথ বেছে নিয়েছে ইংল্যান্ড, তার আরেকটি প্রদর্শনী দেখা গেল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। দিবা-রাত্রির ম্যাচের প্রথম দিন ৫৮.২ ওভারে ৯ উইকেটে ৩২৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় সফরকারীরা। তাদের রান তোলার গতি ছিল ওভারপ্রতি ৫.৫৭। পাঁচ দিনের টেস্টে প্রথম দিনে ইনিংস ঘোষণা এনিয়ে দেখা গেল চারবার। ইংল্যান্ডের চেয়ে কম ওভারে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করার নজির আছে কেবল একটি। ১৯৭৪ সালে লর্ডসে ৪৪.৫ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩০ রান করে প্রথম ইনিংসের ইতি টেনে দিয়েছিল পাকিস্তান। নিউ জিল্যান্ড বৃহস্পতিবার দিন শেষ করে ৩ উইকেটে ৩৭ রান নিয়ে। ইংলিশদের চেয়ে এখনও ২৮৮ রানে পিছিয়ে স্বাগতিকরা। ডাকেট ও ব্রুক দুইজনই জাগান সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। ১৪ চারে ৬৮ বলে ৮৪ রান করে ফেরেন ওপেনার ডাকেট। পাঁচে নেমে ১ ছক্কা ও ১৫ চারে ৮১ বলে ৮৯ রান করেন ব্রুক। কার্যকর ইনিংস খেলেন অলি পোপ, বেন ফোকস। ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে টস জিতে বোলিং নিয়ে দ্বিতীয় বলেই জ্যাক ক্রলিকে ফেরানোর সুযোগ পায় নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু টম সাউদির বলে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ নিতে পারেননি মাইকেল ব্রেসওয়েল। শূন্য রানে জীবন পেয়ে অবশ্য বেশিদূর যেতে পারেননি ক্রলি। সাউদির পরের ওভারে একই জায়গায় ব্রেসওয়েলের হাতেই ধরা পড়েন তিনি। পোপকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন ডাকেট। দুইজনের ব্যাটে দ্রুত আসতে থাকে রান। তাদের ৯৯ বল স্থায়ী ৯৯ রানের জুটি ভাঙে ডাকেটের বিদায়ে। ৩৬ বলে ফিফটি করা ব্যাটসম্যানকে ফেরান অভিষিক্ত ব্লেয়ার টিকনার। সাউদি ও নিল ওয়্যাগনারের পরপর দুই ওভারে ফেরেন পোপ (৬ চারে ৪২) ও জো রুট (২ চারে ১৪)। বেন স্টোকসকে নিয়ে ৫৫ রানের জুটি গড়েন ব্রুক, যেখানে অগ্রনী ছিলেন তিনি। অভিষিক্ত স্কট কুগেলাইনকে পুল করে ইংলিশ অধিনায়ক মিডউইকেটে ধরা পড়লে ভাঙে তাদের প্রতিরোধ। ব্রুক ও বেন ফোকস মিলে গড়েন আরেকটি পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি। ৪৩ বলে দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি করা ব্রুককে বোল্ড করে ৮৯ রানের জুটি ভাঙেন ওয়্যাগনার। ততক্ষণে তিনশর কাছে পৌঁছে গেছে ইংলিশদের রান। ২০ রানের মধ্যে আরও তিন উইকেট হারানো ইংল্যান্ড এক উইকেট হাতে রেখেই ইতি টেনে দেয় ইনিংসের। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৮২ রানে ৪ উইকেট নেন ওয়্যাগনার। টেস্টে এনিয়ে দ্বাদশবার ইনিংসে চার উইকেট নিলেন এই পেসার। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় কিউইরাও। পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসে নিজের তৃতীয় বলে টম ল্যাথামকে ফিরিয়ে দেন অলিভার রবিনসন। স্বাগতিক ওপেনারের ব্যাট-প্যাডে লেগে বল জমা পড়ে শর্ট লেগ ফিল্ডার পোপের হাতে। কিছুক্ষণ পর আরেকটি উইকেট নিতে পারত ইংল্যান্ড। কিন্তু জেমস অ্যান্ডারসনের বলে ডেভন কনওয়ের ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি দ্বিতীয় স্লিপে থাকা ক্রলি। সেই আক্ষেপে অবশ্য বেশিক্ষণ পুড়তে হয়নি অ্যান্ডারসনকে। অভিজ্ঞ এই পেসার নিজের পরের ওভারে ধরেন আরও বড় শিকার। তার বলে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে কেন উইলিয়ামসনকে ফেরায় ইংল্যান্ড। অ্যান্ডারসনের পরের ওভারে হেনরি নিকোলস বিদায় নেন ক্রলির হাতে ধরা পড়ে। তিন ব্যাটসম্যানের একজনও যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ৯ রানে জীবন পাওয়া কনওয়ে অপরাজিত আছেন ১৭ রান নিয়ে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমেছেন ওয়্যাগনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৮.২ ওভারে ৩২৫/৯ ডিক্লে. (ক্রলি ৪, ডাকেট ৮৪, পোপ ৪২, রুট ১৪, ব্রুক ৮৯, স্টোকস ১৯, ফোকস ৩৮, ব্রড ২, রবিনসন ১৫*, লিচ ১; সাউদি ১৩-১-৭১-২, ওয়্যাগনার ১৬.২-০-৮২-৪, টিকনার ১৩-০-৭২-১, কুগেলাইন ১৩-০-৮০-২, ব্রেসওয়েল ৩-০-১৩-০)
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৮ ওভারে ৩৭/৩ (ল্যাথাম ১, কনওয়ে ১৭*, উইলিয়ামসন ৬, নিকোলস ৪, ওয়্যাগনার ৪*; অ্যান্ডারসন ৭-৪-১০-২, ব্রড ৬-১-১২-০, রবিনসন ৫-০-১০-১)
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা