November 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, November 30th, 2022, 8:10 pm

চীনের প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন মারা গেছেন

অনলাইন ডেস্ক :

চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। বুধবার (৩০ নভেম্বর) চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লিউকেমিয়াসহ একাধিক শারীরিক জটিলতার কারণে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৩ মিনিটে সাংহাইতে তিনি মারা যান।ক্ষমতাসীন চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক চিঠিতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কমরেড জিয়াং জেমিনের মৃত্যু আমাদের দল, আমাদের সামরিক বাহিনী ও আমাদের দেশের সব জাঁতি গোষ্ঠীর জনগণের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।’চিঠিতে জিয়াং জেমনিকে উচ্চ মর্যাদার একজন ‘অসামান্য নেতা, একজন মহান মার্কসবাদী, রাষ্ট্রনায়ক, সামরিক কৌশলবিদ ও কূটনীতিক এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত কমিউনিস্ট যোদ্ধা’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।১৯৮৯ সালে তিয়ানআনমেন ট্রাজেডির পর অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান জিয়াং। ১৩ বছর পর ২০০২ সালে প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওয়ের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি।চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিয়াং দেশকে বৈশ্বিক কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে বের করে নিয়ে আসেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পর্ক মেরামত ব্রতী হন। চীনের যে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন তার শাসনামলেই শুরু হয়েছে।তার হাত ধরেই চীনে মুক্ত বাজারভিত্তিক অর্থনৈতিক সংস্কার, ১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের নিগড় থেকে হংকংয়ের প্রত্যাবর্তন ও ২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য হওয়ার মতো ইতিহাস সৃষ্টিকারী পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে চীনারা।তবে তার সময়ে চীন বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে উন্মুক্ত হলেও দেশের ভেতরে বিরোধীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েছে সরকার। মানবাধিকারকর্মী, শ্রম অধিকার ও গণতন্ত্রপন্থি কর্মীদের দের জেলে ভরা হয়েছে। আধ্যাত্মিক আন্দোলন ফালুন গংকে কমিউনিস্ট পার্টির একচেটিয়া ক্ষমতার জন্য হুমকি মনে করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।জিয়াং যদিও একটানা ১৩ বছর ধরে চীনের রাষ্ট্রপ্রধান ও কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারপার্সন ছিলেন, তিনি কখনই তার দূরদৃষ্টির জন্য খ্যাত ছিলেন না। বরং দলের মধ্যে বিভিন্ন মতাদর্শ বা ধারার জন্য প্রশাসক ও আপোসকারী ব্যক্তিত্ব ছিলেন।২০০২ সালে হু জিনতাওয়ের মাধ্যমে নেতৃত্বের বদলের পর জিয়াং তার ক্ষমতার শিখরে পৌঁছান বলে মনে করা হয়। কারণ অবসরের পরও দীর্ঘ সময়ের জন্য তিনি দলের ‘শক্তিমান মানুষ’ হিসেবে ক্ষমতার কলকাঠি নাড়তেন। চীনা জনগণের মধ্যে তার পরিচিতি ছিল ঝাংঝে বা সিনিয়র হিসেবে।২০০৪ সালে নিজের শেষ রাষ্ট্রীয় খেতাব ত্যাগ করেন জিয়াং। কিন্তু রাজনীতির মঞ্চের নেপথ্যের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে একটা বড় শক্তি হিসেবে হাজির ছিলেন যা বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উত্থানে সহায়ক হয়েছিল। ২০১২ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেন জিনপিং। এরপর জিয়াংয়ের অর্থনৈতিক উদারীকরণ ও কঠোর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ- এই দুইয়ের মিশ্রণেই এখনও চীন শাসন করছেন তিনি।