July 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, November 18th, 2021, 8:57 pm

নদীতীরের ২১৪৪৩ স্থাপনা উচ্ছেদ, ৭২৪ একর ভূমি পুনরুদ্ধার হয়েছে

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

নদীসমূহ দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগসহ সারাদেশের বিভিন্ন নদ-নদীর তীরবর্তী অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ২১ হাজার ৪৪৩টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, এসব স্থাপনা উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে ৭২৩.৬২ একর তীরভূমি পুনরুদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা নদীবন্দরে ১৬ হাজার ৪২৪টি, নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে ৪ হাজার ৭৬৯টি, বরিশাল নদীবন্দরে ১৪১টি, আশুগঞ্জ নদীবন্দরে ৫০টি এবং নওয়াপাড়া নদীবন্দরে ৫৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে ঢাকা-২০ আসনের এমপি বেনজীর আহমদের এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বিআইডব্লিউটিএর নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদী দখল রোধে সারাদেশে সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নদীর তীরভূমি পুনর্দখল রোধকল্পে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে নদীর উভয় তীরে ওয়াকওয়ে, আরসিসি স্টেপস, বসার বেঞ্চ, বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ, নদীরপাড় বাঁধাই, গাইড ওয়াল নির্মাণ, বৃক্ষরোপন ইত্যাদি কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ঢাকার চারিদিকে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, বালু ও ধলেশ্বরী নদীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১১০ কিলোমিটার বৃত্তাকার নৌপথের দুই তীরে অবস্থিত ২২০ কিলোমিটার তীরভূমিতে প্রথম পর্যায়ে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে এবং দুটি ইকোপার্ক (নারায়ণগঞ্জের খানপুর, পুরাতন ঢাকার শ্যামপুর) নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে “বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে ও আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। ওই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং টঙ্গী নদীবন্দর এলাকায় ৪ হাজার সীমানা পিলার নির্মিত হয়েছে এবং দেড় হাজার সীমানা পিলারের নির্মাণকাজ চলমান। তিনি বলেন, এ ছাড়া রামচন্দ্রপুর হতে বসিলা ও রায়েরবাজার খাল হতে কামরাঙ্গীরচর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৮ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের মধ্যে ২৭ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের নির্মাণকাজ চলছে। ২১ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের দরপত্র ৯ নভেম্বর গ্রহণ করা হয়েছে। টঙ্গী নদীবন্দর এলাকায় একটি ইকোপার্ক নির্মিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পর্যায়ে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক “ঢাকা শহরের চারপাশে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়)” শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়ণ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের চারপাশে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার স্থাপন করায় অবৈধ দখল হ্রাস পেয়েছে। সীমানা পিলার স্থাপনকাজ সম্পন্ন হলে অবৈধ দখল সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা হবে বলে আশা করা যায়। নদীর গতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিএর নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে, উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের শুকিয়ে যাওয়া/মৃত প্রায় ৪৭টি নদী ড্রেজিং করে তিন হাজার কিলোমিটার নৌপথ খনন করে নাব্য করা হয়েছে। এ ছাড়া মোট ৩৮টি ড্রেজার এবং ১৬৮টি ড্রেজার সহায়ক জলযান সংগ্রহ করা হয়েছে এবং আরও ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে খননকৃত মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি পুনর্খনন করে চালু করা হয়েছে। এর ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে এবং একইসঙ্গে নৌপথের দূরত্ব কমায় পরিবহন ব্যয় কমবে। নৌপথে নির্বিঘেœ যান চলাচলের সুবিধার্থে নদীপথের নাব্য বাড়ানোর লক্ষ্যে ছোট-বড় নদীগুলো খনন করার জন্য বর্তমান সরকার একটি ড্রেজিং মাস্টার প্ল্যান নিয়েছে। এ মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী, বিআইডব্লিউটিএ ১৭৮টি নদী খনন করে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথে নাব্য ফেরাবে। সে অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন হচ্ছে।