ব্যাংকগুলোর চাহিদা মেটাতে নিয়মিত ডলার বিক্রির মধ্যে আমদানি দায় মেটাতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) সবশেষ অর্থ পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
সোমবার দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।
তবে উল্লেখ করা উচিত যে বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে একটি অপ্রচলিত গণনা পদ্ধতি অনুসরণ করে, যাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ প্রকাশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা সব বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে দেখানো হয়। তবে, আগামী মুদ্রানীতিতেই রিজার্ভ হিসাব করতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রিজার্ভের হিসাব বাংলাদেশ দুভাবে করছে। প্রথমত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা সব বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে দেখানো হচ্ছে। আরেকভাবে ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলের অর্থ বাদ দেয়া হচ্ছে।
২০২১ সালে আইএমএফ প্রথমবারের মতো ঘোষণা করেছিল যে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের বইতে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের পরিমাণ দেখানো হয়েছে।
অথচ ৮ বিলিয়ন ডলারের সিংহভাগ রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলে (ইডিএফ) বরাদ্দ- প্রকৃতপক্ষে যা ৭ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি বৃহৎ ঋণ রয়েছে, যা ৫২৫ মিলিয়ন ইউরোতে দেওয়া হয়েছে এবং শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হয়েছে, স্পষ্টতই দেশটি এখন এ অর্থ ফেরত দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
প্রায় প্রত্যেক অর্থনীতিবিদ রিজার্ভ গণনার ক্ষেত্রে মনে করে যে ‘যা ব্যয় করা যায় না তা গণনা করা উচিত নয়।’
এই নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারি পরিসংখ্যান থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার তথ্যটি সংমোধন উচিত।
সুসংবাদ হল যে সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক অবশেষে আইএমএফের সঙ্গে তাদের লেনদেনের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে এবং রবিবার তারা ঘোষণা করে যে আগামী ১ জুলাই তার পরবর্তী অর্ধ-বার্ষিক মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় রিজার্ভ গণনার জন্য আইএমএফের প্রস্তাবিত পদ্ধতি অনুসরণ করবে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার কিছুটা চাপে পড়েছে, কারণ অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্সের প্রবাহ এবং রপ্তানি আয় হ্রাসের প্রবণতা দেখায যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি চলে এসেছিল ২০১৫-১৬ সালে। ২০১৬ সালের জুনে এটি ছিল ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। সুতরাং, প্রায় ৭ বছর পর সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সেই স্তরে নেমে গেছে।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রায় ৮ মাস আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল।
২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে আকু-কে ১ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার অর্থ দেওয়ার ফলে সরকারি রিজার্ভের পরিমাণ ৩৮ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৭ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ৮ বিলিয়ন ডলার বিয়োগ করলে প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
সীমিত পরিসরে খুলেছে অফিস-ব্যাংক; রাজধানীতে যানজট
নেপালে রানওয়ে থেকে ছিটকে বিমান বিধ্বস্ত, ১৮ যাত্রীর মৃত্যু
কোটা আন্দোলন: বাড্ডায় সংঘর্ষে ১ শিক্ষার্থী নিহত, আহত ২ শতাধিক