অনলাইন ডেস্ক :
দুই গোলে এগিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া রিয়াল মাদ্রিদ দ্বিতীয়ার্ধে চাপ বাড়াল আরও। সুযোগও মিলল অনেক; কিন্তু ফিনিশিংয়ে ব্যর্থতায় ব্যবধান বাড়ল না। রায়ো ভাইয়েকানোর বিপক্ষে শেষ দিকে উল্টো পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায় পড়ে যায় তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাক্সিক্ষত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কার্লো আনচেলত্তির দল। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। ঘরের মাঠে দুই ম্যাচ পর জয়ের দেখা পেল কার্লো আনচেলত্তির দল; এখানে আগের দুই লড়াইয়ে ভিয়ারিয়াল ও ওসাসুনার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা। টনি ক্রুসের গোলে রিয়াল এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন করিম বেনজেমা। পরে রাদামেল ফালকাও ব্যবধান কমালে জমে ওঠে লড়াই। খেই হারানো স্বাগতিকরা শেষটায় কোনোমতে ব্যবধান ধরে রাখে। বল দখলে রিয়াল অনেকটাই এগিয়ে। ৭০ মিনিট পর্যন্ত আক্রমণেও আধিপত্য ছিল তাদের। পরে বদলে যাওয়া দৃশ্যপটে গোলের উদ্দেশ্যে শট নেওয়ায় দুই দলই প্রায় সমানে-সমান। রিয়ালের ১৩ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্যে, ভাইয়েকানোর ১২ শটের পাঁচটি লক্ষ্যে। ম্যাচের শুরুতেই কাছ থেকে জালে বল পাঠান ভিনিসিউস জুনিয়র। তবে বাজে অফসাইডের বাঁশি। গোলের জন্য রিয়ালের অপেক্ষা অবশ্য দীর্ঘ হয়নি; চতুর্দশ মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন ক্রুস। ডান দিক দিয়ে ওঠা আক্রমণে মার্কো আসেনসিও ডি-বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষের একজনকে এড়িয়ে আরও দুজনের মধ্য দিয়ে পেনাল্টি স্পটের কাছে বল বাড়ান। আর ছুটে এসে জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন জার্মান মিডফিল্ডার ক্রুস। অফসাইডের পতাকা ওঠে এবারও; তবে ভিএআরে পাল্টায় সিদ্ধান্ত। ম্যাচের শুরুর দিকে একবার ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে উড়িয়ে মারা বেনজেমা ৩৮তম মিনিটে আর হতাশ করেননি। বাঁ থেকে দাভিদ আলাবার ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে ঠা-া মাথায় ছোট্ট টোকায় আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ফরাসি স্ট্রাইকার। দারুণ ছন্দে এগিযে চলা বেলজেমা রিয়ালের জার্সিতে এই নিয়ে চলতি মৌসুমে ১৫ ম্যাচে ১৪ গোল করলেন। এর মধ্যে এবারের লা লিগায় ১১ ম্যাচে তার গোল হলো ১০টি। দুই মিনিট পরই গোলের সংখ্যা বাড়তে পারত। ভিনিসিউসের শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর আলগা বল পেয়ে যান বেনজেমা। কিন্তু তার নিচু হয়ে নেওয়া হেড ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে দারুণ এক গোল হতো পারত ভিনিসিউসের। মাঝমাঠের কাছ থেকে বল পায়ে এগিয়ে একজনকে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে আরও দুজনের বাধা এড়িয়ে শট নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। গোলরক্ষকও এগিয়ে যাওয়ায় বল লক্ষ্যেই ছিল, শেষ মুহূর্তে ঠেকিয়ে দেন ভাইয়েকানো ডিফেন্ডার ইভান বায়িয়ু। খানিক পর ওয়ান-অন-ওয়ানে আগুয়ান গোলরক্ষকের একটু ওপর দিয়ে চিপ শটে চেষ্টা করেন আসেনসিও। তবে কোনোমতে হাত বাড়িয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক স্তই দিমিত্রিয়েস্কি। ৬১তম মিনিটে বেনজেমার আরেকটি কোনাকুনি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতির পর থেকে রিয়ালের প্রবল চাপ সামলানো ভাইয়েকানো ৭৫তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি। দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড বেবের নিচু শট পোস্টে বাধা পায়। পরের মিনিটেই ব্যবধান কমায় তারা। বাঁ থেকে আলভারো গার্সিয়া দূরের পোস্টে ক্রস বাড়ান। ফালকাওয়ের হেড গোলরক্ষক বরাবরই ছিল, কিন্তু মাঝপথে লাফিয়ে উঠে বলের লাইনে পা বাড়ান রিয়াল ডিফেন্ডার আলাবা। বল তার পায়ে লেগে সামান্য দিক পাল্টে জালে জড়ায়। খানিক আগেই বদলি নেমেছিলেন ফালকাও। দলকে গোল এনে দিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিতও দেন। কিন্তু চোটের আঘাতে ১১ মিনিটেই মাঠে তার উজ্জ্বল উপস্থিতির শেষ হয়। গত মাসের শেষ সপ্তাহে তার একমাত্র গোলেই বার্সেলোনাকে হারিয়েছিল ভাইয়েকানো। তিন মিনিট যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে প্রায় সমতা ফিরিয়েই ফেলেছিল দুই মৌসুম পর শীর্ষ লিগে ফেরা দলটি। গোলমুখে জটলার মধ্যে অস্কার ভালেন্তিনের দুর্বল শট কোনোমতে ক্লিয়ার করেন ক্রুস। বল চলে যায় উনাই লোপেসের পায়ে। তার জোরালো শট দারুণ নৈপুণ্যে ফিরিয়ে জয় নিশ্চিত করেন থিবো কোর্তোয়া। ১২ ম্যাচে আট জয় ও তিন ড্রয়ে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফিরল রিয়াল মাদ্রিদ। দুইয়ে নেমে যাওয়া রিয়াল সোসিয়েদাদের পয়েন্ট ২৫। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে সেভিয়া তিনে ও ২২ পয়েন্ট নিয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ চার নম্বরে আছে। এই দুই দল অবশ্য একটি করে ম্যাচ কম খেলেছে। দিনের আরেক ম্যাচে সেল্তা ভিগোর মাঠে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৩-৩ ড্র করা বার্সেলোনা ১২ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে নবম স্থানে।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা