নিজস্ব প্রতিবেদক:
একের পর এক লাইটার জাহাজডুবির ঘটনায় হুমকির মুখে পড়েছে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল। সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে প্রায়ই বালুবাহী বাল্কহেড ও ফিটনেসবিহীন লাইটার জাহাজডুবির ঘটনা ঘটছে। এর ফলে মোংলা বন্দরের চ্যানেলসহ ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যও বিপন্ন হচ্ছে। চলতি বছরে পশুর চ্যানেলে সার, কয়লা ও পাথরবোঝাই ৫টি লাইটার জাহাজ এবং একটি বাল্কহেড ডুবেছে। ওসব ঘটনার পর তদন্তে প্রমাণিত হয় ডুবে যাওয়া সবকটি নৌযান ফিটনেসবিহীন ও আমদানি পণ্য পরিবহনের অনুপযোগী ছিল। পরিবেশবাদী এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর দায়িত্বে অবহেলা আর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ফিটনেসবিহীন লাইটার জাহাজ বন্দর চ্যানেলে চলাচল করতে দেয়ায় একের পর এক ক্ষতিকর পণ্য নিয়ে লাইটারডুবির ঘটনা ঘটছে। তাতে বিপন্ন হচ্ছে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে সুন্দরবন অঞ্চলের পরিবেশ-প্রতিবেশ। মোংলা বন্দর চ্যানেলে সুন্দরবনের মধ্যে বারবার কয়লা, সার, তেল, ক্লিংকার ভর্তি জাহাজ ডুবছে। বিশেষ করে কয়লা বিষাক্ত পদার্থ। তাতে সুন্দরবনের পানিসহ জলজপ্রাণী ও মাছের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি ম্যানগ্রোভ বনের প্রাণপ্রকৃতির খাদ্যচক্রের সমস্যা হচ্ছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি কমাতে সুন্দরবনের মধ্যে পশুর চ্যানেল দিয়ে ফিটনেসবিহীন লাইটার জাহাজসহ নৌ-চলাচল বন্ধে নৌপরিবহন অধিদফতর ও বিআইডব্লিউটিএসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে নজর দেয়া জরুরি।
সূত্র জানায়, মোংলা বন্দর চ্যানেলে পণ্যবোঝাই লাইটার জাহাজডুবির পর প্রতিটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টেই ফিটনেস না থাকা ও অতিরিক্ত পণ্যবোঝাইয়ের কারণে ওসব লাইটার জাহাজ ডুবে যাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। আর বারবার লাইটারডুবির ঘটনায় হুমকির মুখে পড়ছে মোংলা বন্দর চ্যানেল। ফলে মোংলা বন্দর চ্যানেল সচল রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। ওই বিষয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নৌপরিবহন অধিদফতর ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, কেমিক্যাল ও রাসানিক পণ্যবোঝাই লাইটার জাহাজডুবিতে সুন্দরবনের গাছপালা, জলজপ্রাণীসহ প্রাণপ্রকৃতিতে কী ধরনের ক্ষতির হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বন বিভাগের পাশাপাশি পরিবেশ অধিদফতর কাজ করছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে নৌপরিবহন অধিদফতরের খুলনা অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আঞ্চলিক নৌযান সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশনের মোংলার পরিদর্শক মো. আবুল কাশেম ফজলুল হক জানান, নৌপরিবহন অধিদফতরের দায়িত্ব লাইটার জাহাজের পারমিট ও চালকদের সার্টিফিকেট দেয়া। আর বিআইডবি-উটিএ কর্তৃপক্ষের কাজ ওসব লাইটার চলাচলে রুট নির্ধারণ। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ফিটনেসবিহীন লাইটার জাহাজের রুট পারমিট বাতিল করলেই পশুর চ্যানেল রক্ষা করা সম্ভব।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম