করোনার দীর্ঘ ছুটিতে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে রূপ নিয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের (শাবিপ্রবি) চিকিৎসা কেন্দ্র। শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, আইসোলেশন কেন্দ্রসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে নতুন রূপ পেয়েছে শাবিপ্রবির এই চিকিৎসা কেন্দ্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন এই মেডিকেল সেন্টারকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। মেডিকেল সেন্টারের সর্বত্র নতুন টাইলসের ব্যবহার, নতুন করে কেন্দ্রীয় ওষুধ সংরক্ষণ কক্ষ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, শিক্ষার্থীদের অপেক্ষারত কক্ষ ও ডাক্তারদের রোগী দেখার কক্ষ সংস্কার, অত্যাধনিক ড্রেসিং কক্ষ, বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা ও আইসোলেশন কেন্দ্রের ব্যবস্থা বিদ্যামান। বর্তমানে মেডিকেল সেন্টারটি কেবল সরকারি ওষুধের ওপর নির্ভরশীল নয়।
মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো থেকে ৩৩টি ও স্কয়ার থেকে ৩৪টিসহ মোট ৬৭টি আইটেমের ওষুধ ক্রয়ের প্রক্রিয়াধীন আছে। যা দ্রুত মেডিকেল সেন্টারে সরবরাহ করা হবে।
ইতোমধ্যে করোনাকালীন মেডিকেল সেন্টারটি ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক পৃথক আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন করে আলাদা নজরে এসেছে। বর্তমানে এই আইসোলেশন কেন্দ্রে ১৩টি অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলাকালীন সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ, সিলেট নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করেছে। সবশেষ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের টিকা কার্যক্রম চালু করায় দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে মেডিকেল সেন্টারটি।
বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মো. আল-আমীন বলেন, মেডিকেল সেন্টারের আগের পরিবেশ আর বর্তমান পরিবেশের অনেক পার্থক্য। ক্যাম্পাসে নবীন শিক্ষার্থী হিসেবে মেডিকেল সেন্টারের প্রতি যে মনোভাব পোষণ করতাম করোনার দীর্ঘ ছুটিতে এই চিত্রটি পুরোপুরি পাল্টে গেছে। চিকিৎসা সেবায় প্রতিটা ব্যক্তির আন্তরিকতার কমতি নেই।
শাবিপ্রবির ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে চিকিৎসা কেন্দ্র। বর্তমানে উপাচার্য স্যারের আন্তরিকতায় মেডিকেল সেন্টারটিতে সুন্দর একটি পরিবেশ কাজ করছে। করোনার ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আগমন ঘটছে। শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবায় মেডিকেল সেন্টার কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার কোনোরকম ঘাটতি থাকবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রশাসক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কবির হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানে আমাদের মেডিকেল সেন্টারটি সার্বক্ষণিক প্রস্তুত। করোনার এই দীর্ঘ ছুটিতে মেডিকেল সেন্টারটি একটি উন্নত সেবার পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো মানের ওষুধের ব্যবস্থাসহ, আরামদায়ক সিক-বেডের ব্যবস্থা করছি। আশা করছি কোনো শিক্ষার্থীই এখন থেকে মেডিকেল সেন্টারের প্রতি বিমুখ হবে না। শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে আমাদের সামনে আরও যা যা প্রয়োজন সকল ব্যবস্থাই নেয়া হবে।
শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে কেউ যেন মেডিকেল সেন্টারের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে আরও অসুস্থ হয়ে না পড়ে, এ দিকটি বিবেচনা করে আমরা মেডিকেল সেন্টারটিকে অত্যাধুনিক করার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে সেন্টারটি উন্নত মানের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে সেবার পরিধি আরও বাড়বে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক