জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
চেম্বার কার্যালয়ে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে কাস্টম্স, এক্সাইজ এন্ড ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট এর কমিশনার মোহাম্মদ আহসানুল হক এর সাথে সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১১:০০ টায় চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করে সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।
সভায় কাস্টম্স কমিশনার মোহাম্মদ আহসানুল হক বলেন, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট সরকারের রাজস্ব আয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। ব্যবসায়ীদের প্রদানকৃত ভ্যাট ও অন্যান্য রাজস্বের মাধ্যমে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, ভ্যাট পরোক্ষ কর। এটি ব্যবসায়ীরা ক্রেতাসাধারণের নিকট হতে সংগ্রহ করে সরকারের কোষাগারে জমা দিবেন। তিনি বিভিন্ন সুপারশপগুলোর সিলেট আউটলেট সমূহ স্থানীয় কমিশনারেট এর অধীনে নিবন্ধনের জন্য উচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে জানান। তিনি ব্যবসায়ীদের ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যাপারে ভ্যাট পরামর্শক এর ব্যবস্থা করা ও ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। তিনি ব্যবসায়ীদেরকে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সনদ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমান স্থানে রাখার অনুরোধ জানান এবং ভ্যাট রেয়াত পাওয়ার জন্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রদানকৃত এ.টি. রিটার্ন জমার সময় নির্ধারিত ফরমে উল্লেখ করার অনুরোধ জানান। এছাড়াও তিনি জটিলতা এড়াতে আমদানিকারকগণকে এলসি-তে উল্লেখিত পরিমানের চেয়ে বেশী মালামাল আমদানি না করার আহবান জানান। তিনি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সিলেট চেম্বার অব কমার্স ও ব্যবসায়ীদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং ব্যবসায়ীরা ভ্যাট ও অন্যান্য রাজস্ব প্রদানে যাতে কোন ধরণের হয়রানির শিকার না হন সেবিষয়ে লক্ষ্য রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ মতবিনিময় সভায় মিলিত হওয়ার জন্য কাস্টম্স, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারের উন্নয়নের সহযোগী। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট, ট্যাক্স প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখেন। তাই ব্যবসায়ীদের সকল ধরণের সুবিধা-অসুবিধা দেখা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, গত দুই বছর যাবৎ যাবৎ দফায় দফায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা যে পরিমান আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে যে মন্দাভাব সৃষ্টি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে বেশ কিছুদিন লাগবে। তিনি এসময়ে ব্যবসায়ীদের উপর ভ্যাট আদায়ের জন্য কোন ধরণের চাপ সৃষ্টি না করার আহবান জানান। তিনি বলেন, সম্প্রতি ভ্যাট কর্মকর্তারা ভ্যাট আদায়ের জন্য ব্যবসায়ীদেরকে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন মর্মে আমরা অবগত হয়েছি, তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাস্টম্স ও ভ্যাট কমিশনার মহোদয়কে অনুরোধ জানান। এছাড়াও তিনি ব্যবসায়ীগণের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবনা সমূহ যেমন- ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ভ্যাটের পরিধি বৃদ্ধি, খুচরা দোকানগুলোতে বিধিবহির্ভূতভাবে ভ্যাট প্রদানের জন্য চাপ না দেওয়া, সুপারশপগুলোতে ক্রেতাসাধারণ কর্তৃক প্রদানকৃত ভ্যাট সিলেট কমিশনারেট এর নিবন্ধন তালিকায় আনা, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যে শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে পান আমদানিসহ সকল বৈধ পন্য আমদানীর অনুমতি প্রদান, ভোলাগঞ্জ স্টেশনে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু সহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন কাস্টম্স, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট এর অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ রাশেদুল আলম, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, পরিচালক মোঃ হিজকিল গুলজার, মুশফিক জায়গীরদার, মুজিবুর রহমান মিন্টু, আলীমুল এহছান চৌধুরী, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, কাজী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সরোয়ার হোসেন ছেদু, সিলেট চেম্বারের সচিব গোলাম আক্তার ফারুক, যুগ্ম সচিব নূরানী জাহান কলি, সহকারী সচিব সানু উদ্দিন রুবেল, এক্সিকিউটি অফিসার শাহআলম রাফি, আইটি অফিসার মোঃ আতিকুর রহমান প্রমুখ। সভাটি সঞ্চালনা করেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মিনতি দেবী।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি