May 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, May 9th, 2024, 9:49 pm

খোলা বাজারে ডলার সংকট, দাম বেড়ে ১২৫ টাকায় উন্নীত

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংক এক ধাপে ডলারের বিনিময় হার ৭ টাকা বাড়ানোর একদিন পর বৃহস্পতিবার অনানুষ্ঠানিক খোলা বাজারে মার্কিন ডলার প্রায় উধাও হয়ে যায়।

টাকায় মার্কিন ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে বুধবার ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে একদিনেই ডলারের বিনিময় হার ৭ টাকা বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

ফলে ভবিষ্যতে মুনাফার জন্য ব্যবসায়ীদের মুদ্রা মজুতদারির খবরে খোলা বাজারে ডলার খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। এমনকি মরিয়া ক্রেতারা তাদের বিদেশে যাতায়াত ও চিকিৎসার খরচ মেটাতে খোলা বাজারে এক ডলারের জন্য ১২৫ টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করেছেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার বেসরকারি চাকরিজীবী মুনিরা আহসান ইউএনবিকে বলেন, থাইল্যান্ডে তার বাবার চিকিৎসার জন্য তিনি খোলা বাজার থেকে পাঁচ হাজার ডলার কেনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি দেখেছেন, খোলা বাজারে প্রতি ডলার ১২৫ টাকার বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে।

এর আগে তিনি ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো একাধিক নথি চেয়েছিল এবং পাঁচ হাজার ডলার বিক্রি করার মতো অনেক প্রশ্ন ছিল। মুনিরা জানান, একটি ব্যাংক ৫ ধরনের কাগজপত্র নিয়ে মাত্র ৫০০ ডলার সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে।

থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে বাবার অস্ত্রোপচারের ডলার জোগাড় করতে খোলা বাজারে গিয়েছিলেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্টনের এক মানি চেঞ্জার বলেন, ৮ মে পর্যন্ত অপ্রাতিষ্ঠানিক বাজারে মার্কিন ডলারের দর ১১৭ টাকার আশপাশে থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিনিময় হার বাড়ানোর ঘোষণার পর হঠাৎ করে তা বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘এটা শুধু মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রেই ঘটেনি। হজ মৌসুম শুরু হওয়ায় সৌদির রিয়ালের চাহিদা বেশি থাকায় অন্যান্য মুদ্রার বিনিময় হারও রাতারাতি ৪-৫ টাকা বেড়েছে।’

নগদ ডলার ও অন্যান্য প্রধান মুদ্রার প্রধান উৎস খোলা বাজারে একদিনের ব্যবধানে বিনিময় হার ৭ টাকা বাড়ানোর খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের একদিন পরই বিনিময় হার লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।

মান্নান মিয়া বেশ কয়েক বছর ধরে খোলা বাজারে ডলার বিক্রি করছেন। বৃহস্পতিবার ক্রেতা পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন এই প্রতিবেদক। তিনি প্রথমে বলেছিলেন, ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু পরে তিনি ১১৯ টাকা দরে ডলার বিক্রি করতে রাজি হন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ব্যাংকে পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে এবং মানুষ ডলার কিনতে ব্যাংকে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের খুচরা বিক্রির জন্য ডলারের পর্যাপ্ত রিজার্ভ আছে এবং সরবরাহ ভালো। এখন কে বিক্রি করবে বা করবে না সেটা তার ব্যাপার। যারা মানি এক্সচেঞ্জে ডলার পাননি তারা ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে পারেন। খুচরা ও এলসি চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখন ৫০ মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রয়েছে।’

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, খোলা বাজারে ডলারের সাময়িক ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বাড়াতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।

তিনি বলেন, ডলার ব্যবসায়ীরা বৈদেশিক মুদ্রার দর আরও বাড়ানোর সংকেত পেয়েছেন, সে কারণেই তারা স্টক রাখার পর ডলার ঘাটতির কথা বলছেন। সরবরাহ বাড়লে হার কমবে।

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, খোলাবাজারে বিনিময় হার সব সময়ই ব্যাংকের চেয়ে বেশি থাকে, কখনো কখনো বাজার তদারকির অভাবে তা অস্বাভাবিক পর্যায়ে বেড়ে যায়।

—–ইউএনবি