November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, April 2nd, 2024, 4:25 pm

চাঁদপুরে হরিজন সম্প্রদায়ের জন্য তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন দুটি আবাসিক ভবন, থাকবে সব নাগরিক সুবিধা

চাঁদপুর জেলা শহরের অবহেলিত হরিজন সম্প্রদায়ের পরিবারের জন্য নির্মিত হচ্ছে ২টি দৃষ্টিনন্দন আবাসিক ভবন। যা পাশাপাশি অবস্থিত। ভবন দুটিতে নাগরিক সুবিধা ছাড়াও এর চারিদিকে থাকবে সীমানা প্রাচীর।

জেলা শহরের ৯নং ওয়ার্ডের র্স্বণখোলা রোডের উত্তর শেষ অংশে অবস্থিত হরিজন কলোনি প্রাঙ্গণে এ ভবন দুটি নির্মিত হচ্ছে, যা সারা জেলায় প্রথম।

এখানকার হরিজনরা (নারী-পুরুষ) পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী। জেলা ও উপজেলা শহরের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবেও তারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছেন।

সরকারের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ কোটি টাকার এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। যা শেখ হাসিনার একটি বিশেষ প্রকল্প বলে জানান পৌর মেয়র ও কর্মকর্তারা।

চাঁদপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) কর্মকর্তারা এ ভবন দুটির নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন। ইউএনডিপি ও বর্তমান সরকার এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় করছেন ১০ কোটি টাকা।

আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় গত বছরের ৪ নভেম্বর। কাজটির যৌথভাবে উদ্বোধন করেন এলজিআরডি সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহীম, ইউএনডিপি’র প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার, এলজিআরডি’র যুগ্ন সচিব মাসুম পাটোয়ারি এবং চাঁদপুর পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান।

এর আগে এখানে ২০২২ সালের আগস্টে এসেছিলেন বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট সি ডিকসন। তখন তিনিও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের ওপর জোর দেন।

ইতোমধ্যে নতুন এ ২টি ভবনের নির্মান কাজের প্রায় ৮৫ শতাংশই সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান ঠিকাদারের লোকদের মধ্যে সেলিম পাটোয়ারি, শাহজাহান খান ও বিদ্যুৎকর্মী কাওসার হোসেন।

সরেজমিনে একই চিত্র পাওয়া গেছে এবং তখন নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। এ সময় আলাপকালে হরিজন সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, সরকারের এ উদ্যোগে তারা অত্যন্ত আনন্দিত ও উদ্বেলিত।

প্রায় শতর্বষী ফণী লাল সাহা, শ্যামল, আকাশ, বিধান, গৃহিণী দৃষ্টি দাশ, আলো রাণীসহ অনেকেই তাদের আনন্দের কথা প্রকাশ করে বলেন, তারা অধীর আগ্রহে আছেন কবে ভবনে উঠবেন। সেখানে আরাম ও আয়েশ করে ঘুমাবেন।

শতর্বষী ফণী লাল ইউএনবিকে জানান, ‘জীবনেতো স্বপ্নেও ভাবিনি বিল্ডিংয়ে বসবাস করব। আমাদের দিকে সরকার তাকাবে। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।’

আবার, তাদের অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তাদের ছেলে ও মেয়েদের শহরের কোনো স্কুলে ভর্তি করানো যায় না, কারণ তারা হরিজন। তারা মায়ের ভাষাটিও ভুলে যাচ্ছেন।

আলাপকালে পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে আমরা চেষ্টা করছি। এখানে সরকার ও ইউএনডিপি আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, আপাতত ৮৮টি হরিজন পরিবারকে এ দুটি ভবনে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে। এখানে থাকবে সব নাগরিক সুবিধা। সামাজিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাও থাকছে। পরবর্তীতে এখানে আরও একটি ভবন নিমিত হবে।

ভবন দুটির কাজ শেষ হতে আরও ১ থেকে দেড় মাস সময় লাগবে। শেষ হলে দেশের বিভিন্ন স্থানে এরকম নির্মিতব্য ভবনের সঙ্গে জুনে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।

চাঁদপুর জেলা শহরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন প্রায় ৭০-৭৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। জেলা শহরের পুরানবাজার ও বড় রেল স্টেশন সংলগ্ন আরও ২টি হরিজন কলোনিতে ৫০-৬০ বছর যাবত বসবাস করছেন আরও প্রায় ৪৫০ পরিবার। তাদেরও দাবি, তাদের কলোনিতেও জীবনমান উন্নয়নে দ্রুত এরকম ভবন র্নিমান করা হোক।

—-ইউএনবি