করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখনো চালু হয়নি বন্ধ হয়ে যাওয়া ৬টি ট্রেন সার্ভিস। বর্তমানে মাত্র ৩টি ট্রেন চলাচল করছে। ফলে এই জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। অবিলম্বে বন্ধ হওয়া ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়েছে জেলাবাসীর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন জানায়, করোনার আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আন্তঃনগর, মেইল ও লোকালসহ মোট ৯টি ট্রেন সার্ভিস চালু ছিল। কিন্তু করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ২০২০ সালের ২৪ মার্চ থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে একই বছরের ৩০ মে থেকে পুনরায় রেল সার্ভিস চালু করা হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি আন্তঃনগরসহ তিনটি ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়। আরও ছয়টি ট্রেন সার্ভিস এখনো বন্ধ রয়েছে।
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে ট্রেন সার্ভিসগুলো বন্ধ থাকায় রেল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ জেলার সাধারণ মানুষ।
যাত্রীরা জানান, করোনার আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তঃনগর বনলতা, সিল্কসিটি, ধুমকেতু ছাড়াও লোকালসহ ৯টি ট্রেন চলাচল করত। তখন দিনের বিভিন্ন সময়ে ট্রেন চলাচল থাকায় অন্যত্র যেতে সমস্যা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে দিনে ও রাতে মাত্র তিনটি ট্রেন চলাচল করছে। এতে যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আখতার হোসেন জানান, তিনি ঢাকায় বসবাস করেন, তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাগঞ্জে। ট্রেনে যাতায়াত নিরাপদ ও আরামদায়ক হওয়ায় তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ট্রেনেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে যাতায়াত করেন। করোনার আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন ছিল। তখন টিকিট পেতে সমস্যা হতো না। কিন্তু এখন মাত্র একটি ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস চলাচল করছে। এতে করে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় টিকিট পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এতে শুধু তিনি একা নন অন্যান্যরাও এ সমস্যায় পড়েছেন। জরুরী যাতায়াতের জন্য বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে সড়ক পথে বাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যাত্রীদের রেল সেবা পেতে বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রেনগুলো দ্রুত চালু করা উচিত বলে জানান তিনি।
চাঁপাইনবাগঞ্জ শহরের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম সরকার বলেন, আগে ট্রেনের সংখ্যা বেশি থাকায় ট্রেনে পাশের জেলা রাজশাহী যাতায়াতের সুবিধা ছিল। কিন্তু এখন সে সুবিধা না থাকায় বাসে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
বেসরকারি একটি কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত জহরুল ইসলাম বলেন, সবগুলো ট্রেন চালু থাকলে আমাদের সুবিধা হত। এখনতো জরুরি কাজে রাজশাহী বা অন্য জেলায় যেতে হলে বাসের ওপর নির্ভশীল হতে হচ্ছে। এতে একদিকে ঝুঁকি আছে তেমনি আবার ভাড়াও বেশি গুনতে হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাগরিক কমিটির সমস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বন্ধ থাকা সব কটি ট্রেন পুনরায় চালুর দাবিতে আমারা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি। চেষ্টা করেছি কিন্তু ফল পাওয়া যায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন মাস্টার শহিদুল ইসলাম জানান, ট্রেনগুলো চলাচল না করার কারণে স্টেশনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য কারা যাচ্ছে। তবে
বন্ধ হওয়া ট্রেন কবে চালু হবে এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। কী কারণে বন্ধ আছে এটি আমাদেরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক