November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, February 20th, 2024, 7:55 pm

তামাক ও ই-সিগারেট প্রতিরোধে যা যা করণীয় তা করতে হবে: সায়মা ওয়াজেদ

ক্রমবর্ধমান তামাক সেবন ও ই-সিগারেট ব্যবহারের প্রবণতার বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ জোরদার করতে দৃঢ়তার সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এতে বলা হয়, কয়েক বছরের ধরে তামাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও, এই অঞ্চল এখনও বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারের হারের দিক থেকে উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। এমনকি ই-সিগারেটের ব্যবহারের হারও উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ।

তিনি বলেছেন, ‘এই অঞ্চলে এখনও তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ফলে তাদের ক্যান্সার, শ্বাসযন্ত্র ও হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণের জন্যও জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এর আগে ধূমপান বন্ধের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা, কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়নি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবন বাঁচাতে তামাক ও ই-সিগারেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।’

জানা গেছে, এ অঞ্চলে ২০০০ সালে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩ দশমিক ৭ শতাংশে।

তবে এ বছর প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, আনুমানিক ৪১ কোটি ১০ লাখ মানুষ এখনও তামাক ব্যবহার করছে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য স্থায়ী ঝুঁকি।

এই অঞ্চলে বিস্ময়করভাবে ২৮০ মিলিয়ন ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী রয়েছে; যা বিশ্বব্যাপী তামাক ব্যবহারকারীর প্রায় ৭৭ শতাংশ। এর মধ্যে ১৩-১৫ বছর বয়সী প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ কিশোর তামাক ব্যবহারকারী, যা বিশ্বব্যাপী মোট তামাক ব্যবহারকারীর প্রায় ৩০ শতাংশ। এছাড়া ই-সিগারেটের ব্যবহার বৃদ্ধি (বিশেষত যুবকদের মধ্যে) একটি নতুন হুমকি তৈরি করেছে।

থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ই-সিগারেটের ব্যবহার ব্যাপক বেড়েছে। সেখানে ২০১৫ সালের এর ব্যবহারকারী ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশে।

ক্রমবর্ধমান সংকটের সমাধানে এই অঞ্চলের দেশগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০২৪ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ এবং ভারত ‘টোব্যাকো এন্ডগেম’ উদ্যোগ নিয়েছে।

এছাড়া, ডিপিআর কোরিয়া, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও পূর্ব তিমুরের মতো দেশগুলো ই-সিগারেটের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। আর মালদ্বীপে এটি নিয়ন্ত্রিত তামাকজাত পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এ অঞ্চলজুড়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ২০০০ সালে তামাক ব্যবহারকারী পুরুষের সংখ্যা ছিল ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ শতাংশে।

একই সময়ে নারী ব্যবহারকারীর হার ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধীন অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কমেছে এ অঞ্চলে।

অসংক্রামক রোগ (এনসিডি)-২০২৫ অনুযায়ী তামাকের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যমাত্রার পূরণে আফ্রিকা ও এই অঞ্চলের এসব অর্জন সহায়তা করবে।

তামাক নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমপাওয়ার প্যাকেজ এবং অন্যান্য উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশগুলো চাহিদা কমানোর কৌশল প্রয়োগ করছে। এ অঞ্চলের ২০০ কোটির বেশি মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও নীতিমালার আরও জোরালো প্রয়োগ প্রয়োজন। আর এজন্য তামাক শিল্পসংশ্লিষ্ট উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপেরও প্রয়োজন।

—–ইউএনবি