অনলাইন ডেস্ক :
ত্রিপুরার মুসলিমদের বাড়িঘর ও মসজিদে হামলার পর উত্তেজনা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে সেখানকার সরকার। যেসব এলাকায় হামলা হয়েছে, ওইসব এলাকায় জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিবেশী বাংলাদেশে শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় হিন্দুদের মন্দির, মন্ডপ ও বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদে ত্রিপুরার হিন্দুরা প্রতিবাদ র্যালি বের করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পরে এর প্রতিবাদে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের বাড়ি ও মসজিদে হামলা করে বিক্ষুব্ধদের একাংশ। গত ১৩ অক্টোবর পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে কুমিল্লার নানুয়ারদীঘির পাড় এলাকায় একটি মন্ডপে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধরা। পরে এ ঘটনার জের ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চলতে থাকে, যাতে সাতজনের প্রাণহানি ঘটে। ওইসব ঘটনার পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও ত্রিপুরায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দিনে উত্তর ত্রিপুরা জেলায় দশটি সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর সীমান্তের শহর পানিসাগরে সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। এই শহরে একটি মসজিদ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা।অভিযোগ এসেছে, ক্ষমতাসীন বিজেপি সমর্থিত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইপি) নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে। পানিসাগরের সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা সৌভিক দে বিবিসিকে বলেন, মঙ্গলবার ওই র্যালিতে সাড়ে তিন হাজার লোক অংশ নেয়। তাদের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কয়েক সদস্য স্থানীয় চামটিলা মসজিদে হামলা ও লুটপাট চালায়। এর খানিকপর রোয়া বাজার এলাকায় তিনটি মুসলিম বাড়ি ও তিনটি দোকানে লুটপাটের খবর আসে। আগুন দেওয়া হয় দুটি দোকানে। এ ঘটনায় এখন অবধি একটি মামলা হয়েছে।
ত্রিপুরা পুলিশ টুইটারে বলেছে, ‘কিছুলোক সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক আইডি খুলে ত্রিপুরার ব্যাপারে মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে। অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।’ গত সপ্তাহে জামিয়ত উলামা-ই-হিন্দ অভিযোগ করে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই র্যালির সময় আরও অনেক মসজিদ ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হামলা হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যে দেড়শ’র বেশি মসজিদ তারা রক্ষা করেছে। ত্রিপুরার জনসংখ্যা ৪২ লাখ, যার ৯ শতাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় সাংসদ সুস্মিতা দেব অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে সহিংসতাকে ব্যবহার করে ত্রাস ছড়াতে চাইছে বিজেপি। নভেম্বরে আসন্ন মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে তারা এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভোটার টানতে চাইছে। রাজ্য বিজেপির এক নেতা এর জবাবে বলেন, বাংলাদেশের ঘটনাকে পুঁজি করে রাজনীতির ময়দান ঘোলাটে করার চেষ্টা করবেন না। কেন্দ্র সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে জোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু