November 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 14th, 2023, 9:23 pm

নিত্যপণ্যের দাম এখনও চড়া, সুখবর নেই ক্রেতাদের জন্য

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঈদুল আজহার পর দুই সপ্তাহের বেশি গড়ালেও সবজির বাজার এখনও চড়া। তাছাড়া অন্যান্য সবজির মতো ঈদের পর আলুর দাম হঠাৎই বাড়তি। সঙ্গে কাঁচা মরিচের বাজারের অস্থিরতা এখনো কাটেনি। আর চিনির সংকট দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বাজারে ক্রেতাদের জন্য আপাতত সুখবর নেই বললেই চলে। তবে বাজারে ভোক্তার জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটা সাময়িক সময়ের জন্য। কয়েকদিন পর দাম আবার বেড়ে যাবে। শুক্রবার রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট বাজার, গোড়ান বাজার ও মেরাদিয়া হাটে দেখা গেছে, এসব বাজারের অধিকাংশ দোকানেই সবজির দাম বাড়তি। প্রতিকেজি ভালো মানের ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। ঈদের আগে একই আলুর দাম ছিল প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। বর্তমানে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজর দাম কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।

ঈদের আগে ঢাকার বাজারে পেঁয়াজের দাম উঠেছিল প্রতিকেজি ১০০ টাকার মতো। পাশাপাশি গেল সপ্তাহে কালো গোলবেগুনের দামও ছিল বাড়তি। এ সপ্তাহে ভাল মানের কালো গোলবেগুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, ঈদের আগে যা ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এ সপ্তাহেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ, প্রতিকেজি ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকায়। ঈদের পর ঢাকার বাজারে কাঁচা মরিচের দাম উঠেছিল প্রতি কেজি ৮০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত। সে তুলনায় এখন দাম কিছুটা কমেছে। এ সপ্তাহে করলার দাম পৌঁছেছে ১০০ টাকা কেজিতে। ডায়বেটিস রোগীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সবজির দরদাম করে নিলেও ৯০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যান্য সবজির মধ্যে সস্তা হিসেবে পরিচিত প্রতিকেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার উপরে।

প্রতিকেজি কাঁকরোল এবং কচুর লতি ৮০ টাকায়। ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স এবং পটল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। খিলগাঁও বাজারের সবজিবিক্রেতা ফজলে রাব্বি বলেন, গেল দুইদিন ঢাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে সবজির গাড়ি কম এসেছে। যে কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যে দামে কিনি সেই অনুযায়ী বিক্রি করি। বেশি লাভ করি না। বেশি দামে বিক্রি করলে কাস্টমার কিনে কম। তখন অনেক সবজি বিক্রি না হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। আর যে সবজির দাম বেশি সেটা কম পরিমাণে কিনে আনি। মুদি বাজারে প্রতিকেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩১০ টাকায়। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। বাজারে চিনির সংকট অনেক দিন ধরেই। বর্তমানে বাজারে গড়ে দশটি দোকানের মধ্যে ৫টিতে প্যাকেট চিনি পাওয়া যাচ্ছে।

প্যাকেট চিনি প্রতিকেজি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যদিও বেশিরভাগ দোকানে প্যাকেট চিনি পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান বিক্রেতারা। আর এলাকার খুচরা দোকানে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত এমনটি জানিয়েছেন দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার মুদি দোকানি মো. মাসুদ পারভেজ। কথা হলে তিনি বলেন, চিনির যে পরিমাণ চাহিদা সে তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। অনেক কষ্ট করে এক বস্তা চিনি কিনতে পেরেছি। তবে দাম বেশি হওয়ায় অনেক কাস্টমাররা মাঝেমধ্যে গরম দেখায়। কিন্তু এখানে তো দোকানদারের কিছু করার নাই। আমরা তো লাভ ছাড়া বিক্রি করতে পারব না। অন্য দিকে কোরবানির ঈদের পর বাজারে মাংসের চাহিদা স্বাভাবিকভাবে কম থাকে। তাই মাংসের দামও অনেকটাই কমেছে। এ সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল প্রতিকেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকায়।

সোনালি মুরগির কেজি ২৮০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকার মতো। এমনটাই জানিয়েছেন মেরাদিয়া হাটের মুরগিবিক্রেতা মো আতিকুল ইসলাম। এদিকে বেশির ভাগ বাজারে গরুর মাংস আগের মত বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। খাসির মাংস প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়। মাছের মধ্যে তেলাপিয়া মাছ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়। পাঙাশ মাছ প্রতিকেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। পাবদা মাছ প্রতিকেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। টাটকিনি মাছ প্রতিকেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। আকার ভেদে রুই মাছ প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। বড় সাইজের গলদা চিংড়ি প্রতিকেজি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকার মতো। হাওরের মিশ্র ছোট মাছ ৫০০ টাকা কেজি।