November 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 17th, 2023, 8:50 pm

পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশাল জয় অস্ট্রেলিয়ার

অনলাইন ডেস্ক :

আরও একবার মুখ থুবড়ে পড়ল পাকিস্তানের ব্যাটিং। বিশাল লক্ষ্যে নূন্যতম লড়াইও করতে পারলেন না শান মাসুদ, বাবর আজমরা। সম্মিলিত বোলিং দাপটে বিশাল ব্যবধানে জিতে সিরিজ শুরু করল অস্ট্রেলিয়া। পার্থে রোববার ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতায় দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান অল আউট হয়েছে স্রেফ ৮৯ রানে। ৪৫০ রানের লক্ষ্য দিয়ে স্বাগতিকরা জিতেছে ৩৬০ রানে। পাকিস্তানের বিপক্ষে রানের হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার এর চেয়ে বড় জয় আছে আর দুইটি। ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষেই দ্বিতীয় ইনিংসে লিড তিনশ ছুঁয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।

শনিবার এর সঙ্গে তারা যোগ করে আরও ১৪৯ রান। ৫ উইকেটে ২৩৩ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। পাহাড় টপকানোর চ্যালেঞ্জ নেওয়া তো দূরের কথা, হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং। দলের এই দুর্দান্ত জয়ের দিন অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় ও সব মিলিয়ে বিশ্বের অষ্টম বোলার হিসেবে পাঁচশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন লায়ন। পরে আরও এক শিকার ধরে ৫০১ উইকেটে ম্যাচ শেষ করেছেন ৩৬ বছর বয়সী অফ স্পিনার। বড় অর্জন থেকে ৪ উইকেট দূরে থেকে ম্যাচ শুরু করেন লায়ন।

প্রথম ইনিংসে তিন শিকার ধরলে বাকি থাকে আরও একটি। দ্বিতীয় ইনিংসে দ্বাদশ ওভারে তাকে আক্রমণে আনেন কামিন্স। কাক্সিক্ষত উইকেটের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয় ২৮তম ওভার পর্যন্ত। ২০১১ সালে প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করা লায়ন পাঁচশর ঠিকানায় পৌঁছালেন ২৩০ ইনিংসে। প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে ২৩ বার ইনিংসে ৫ উইকেটের সঙ্গে ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন ৪ বার। লায়নের বড় কীর্তির ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক অবশ্য মিচেল মার্শ। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানের পর দ্বিতীয়বারে তিনি খেলেন ৬৩ রানের অপরাজিত ইনিংস।

সঙ্গে বল হাতেও নেন ১ উইকেট। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। আগের দিন ৪০ পেরিয়ে অপরাজিত থাকা স্টিভেন স্মিথ রোববার ফিরে যান শুরুতেই। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও তাকে ফেরান খুররাম শাহজাদ। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ট্রাভিস হেডও। একশ পেরোতেই ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। তবে পাকিস্তানকে চেপে বসতে দেননি উসমান খাওয়াজা ও মিচেল মার্শ। আগের দিন মন্থর ব্যাটিং করা খাওয়াজা এবার বদলে ফেলেন ধরন। অন্য প্রান্তে মার্শও খেলতে থাকেন ওয়ানডের মতো করে। আমের জামালকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারেন মার্শ।

পরের ওভারে আঘা সালমানের বল ছক্কায় ওড়ান বোলারের মাথার ওপর দিয়ে। কিছুক্ষণ পর তার সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি শান মাসুদ। ২৩ রানে বেঁচে যান মার্শ। তার বেঁচে যাওয়ার পরের ওভারে সালমানকে জোড়া চার মেরে ১৫১ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান খাওয়াজা। এরপর বাড়ান রানের গতি। ফাহিম আশরাফ, শাহিন শাহ আফ্রিদির ওভারে পরপর মারেন দুটি করে চার। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি পূর্ণ করেন মার্শ। খাওয়াজার সঙ্গে তার ষষ্ঠ উইকেটে জুটিতে দুইশ ছাড়ায় অস্ট্রেলিয়া, চারশ পেরিয়ে যায় লিড। গোছানো ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির দুয়ারে পৌঁছে যান খাওয়াজা। কিন্তু ফেরেন আক্ষেপ নিয়ে।

আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরের বল আড়াআড়ি ব্যাটে খেলার চেষ্টায় ডিপ থার্ড ম্যানে ধরা পড়েন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার। ১৯০ বলের ইনিংসে ৯ চারে তিনি করেন ৯০ রান। খাওয়াজার বিদায়ে ভাঙে ১২৬ রানের জুটি। একইসঙ্গে ইনিংস ঘোষণা করে দেন কামিন্স। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই আব্দুল্লাহ শাফিকের উইকেট হারায় পাকিস্তান। দলের পঞ্চাশ হওয়ার আগে ফেরেন মাসুদ, ইমাম উল হক, বাবর আজম। দারুণ বোলিংয়ে শাফিক, ইমামকে আউট করেন মিচেল স্টার্ক। কামিন্সের অফ স্টাম্প ঘেঁষা দুর্দান্ত ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন বাবর।

মাসুদকে কট বিহাইন্ড করেন জশ হেইজেলউড। ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর টিকতে পারেনি বাকিরাও। একপ্রান্তে সৌদ শাকিল কিছুক্ষণ চেষ্টা করেন। তবে পারেননি বেশি কিছু করতে। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে হেইজেলউডের শিকার হন তিনি। ঠিক পরের বলেই শাহজাদকে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দারুণ জয় নিশ্চিত করেন হেইজেলউড। ইনিংসে ৩টি করে উইকেট নেন স্টার্ক, হেইজেলউড। মেলবোর্নে আগামী ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডেতে শুরু হবে দুই দলের দ্বিতীয় টেস্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৪৮৭
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২১৬
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৮৪/২) ৬৩.২ ওভারে ২৩৩/৫ (ডি.) (খাওয়াজা ৯০, স্মিথ ৪৫, হেড ১৪, মার্শ ৬৩*; আফ্রিদি ১৮.২-৪-৭৬-১, শাহজাদ ১৬-৪-৪৫-৩, জামাল ৯-০-২৮-১, আশরাফ ৭-০-৩৭-০, সালমান ১৩-১-৩৬-০)

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৫০ রান) ৩০.২ ওভারে ৮৯ (শাফিক ২, ইমাম ১০, মাসুদ ২, বাবর ১৪, শাকিল ২৪, সরফরাজ ৪, ফাহিম ৫, জামাল ০, আফ্রিদি ৩*, শাহজাদ ০; স্টার্ক ৯-২-৩১-৩, হেইজেলউড ৭.২-২-১৩-৩, কামিন্স ৬-১-১১-১, লায়ন ৮-২-১৪-২)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৪৫০ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: মিচেল মার্শ