November 15, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 20th, 2022, 9:55 pm

বন্যায় ক্ষতি কমাতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও স্থান চিহ্নিত করার উদ্যোগ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বন্যায় ক্ষতি কমাতে ঝুঁকিপূণ বাঁধ ও স্থান চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারণ বর্ষাকালে দেশে বন্যা ও নদীভাঙন বেড়ে যায়। অথচ নদীভাঙন রোধ ও বন্যা থেকে রক্ষার জন্যই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যেই ওই বাঁধের অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মন্ত্রণালয় থেকে দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের তালিকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোডের মাঠপর্যায়ের জেলা ও জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীরা সারাদেশের দুর্বল বাঁধ ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের তালিকা তৈরিতে অনীহা দেখাচ্ছে। এ ব্যাপারে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। আর আগামী ১৯ জুনের মধ্যে যেসব জেলা ও জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীরা তালিকা পাঠাবে না তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজানের ঢলে দেশের কয়েকটি জেলার অনেক জনসবতি প্লাবিত হয়েছে। তার মধ্যে কোনো কোনো এলাকায় বাঁধ ভেঙে আকস্মিক বন্যা হয়েছে, আবার কোনো কোনো এলাকায় ভারি বর্ষণের কারণে জলজট হয়ে। পাশাপাশি ভারি বর্ষণের কারণে দেশের আরো অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা প্রতিরোধের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর হালকা বৃষ্টিপাতে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। তাছাড়া ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ছে। আর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর দু’দিকে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন।
সূত্র জানায়, ভারত যেভাবে সময়ে অসময়ে হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দিচ্ছে তাতে করে দেশে হঠাৎ করে বন্যা হতে পারে। অথচ দেশের ৩৫ জেলার বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ। গত ৪/৫ বছর আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভয়াবহ নদীভাঙন থেকে রক্ষায় দেশের ৩৩টি জেলাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে সরকার। প্রাকৃতির ভয়াবহতা ও বিপজ্জনক বিবেচনায় সমগ্র দেশকে ৬টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। তবে সেগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কার এবং মেরামত কাজ এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওসব বাঁধের কাজ শেষ হতে না হতে আসন্ন বন্যার আশঙ্কায় দেশের ৩৫ জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ। সামান্য বড় বৃষ্টি হলেই ওসব বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা। তবে ওসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে টাকার বরাদ্দ দিতে ঘোষণা দিয়েছিল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কিন্তু প্রকল্পের তালিকা দিতে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা গড়িমশি করছে বলে জানা যায়।
সূত্র আরো জানায়, সারা দেশে নদীভাঙন রোধ, নদীশাসন, নাব্যরক্ষাসহ সামগ্রিক নদী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশ ব-দ্বীপ-২১০০ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই নীতির আলোকে প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকির সম্মুখীন এলাকাগুলোকে এক-একটি গ্রুপের আওতায় এনে টেকসই পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ৩৫ জেলার মধ্যে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, জামালপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, শরীয়তপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রাজবাড়ী, পাবনা, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া ও কক্সবাজার। চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭৩৮৭.৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মোট ১১৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তার মধ্যে পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার প্রকল্প একটি।
এদিকে এ বিষয়ে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম জানান, বন্যায় ক্ষতি কমাতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় অর্থের চাহিদা দ্রুত পাঠাতে ব্যর্থ হবে তারা শাস্তির সম্মুখীণ হবে। বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে টাকার প্রয়োজন হলে টাকা দেয়া হবে।