ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ বলেছেন, বাংলাদেশি বন্ধুদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা কাঙি্খত উন্নয়ন ও সফলতা অর্জন করে দুই দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করব।
শুক্রবার বাংলাদেশে তার তিন দিনের ‘ঐতিহাসিক’ রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করার আগে ভারতীয় সম্প্রদায় এবং বন্ধুদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
কোবিন্দ বলেন, বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম ও বিশ্বস্ততার ব্যাপারে আমি নিঃশঙ্ক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে রক্তের বন্ধনে আমাদের মধ্যে যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক হয়েছে, তা ভবিষ্যতেও আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতা ও ভালোবাসা রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের হৃদয়কে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ভারতীয়দের হৃদয়ে বাংলাদেশের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে এমন এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যাকে বহু পুরনো আত্মীয়তার বন্ধন বলা যায়। আমাদের সম্পর্ক দুটি দেশের বিচক্ষণ নেতৃত্বের দ্বারা সংরক্ষিত হয়ে এসেছে।
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে শ্রদ্ধা নিবেদন করার সময় রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, বাংলাদেশের জনগণের ওপর চালানো নৃশংসতা ও গণহত্যা এবং সশস্ত্র সংগ্রামের কথা স্মরণ করেছেন।
এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ এই অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হওয়ায় বিশ্বের কাছে প্রমাণিত হয়েছে যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের লড়াই একটি ন্যায়সঙ্গত উদ্দেশ্যে ছিল। এই লড়াই ছিল মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ রমনার ঐতিহাসিক রমনা কালী মন্দির পরিদর্শন করেন এবং মন্দিরের সংস্কার পরবর্তী উদ্বোধন করেন।
এসময় তিনি বলেন, আমি এটিকে মা কালীর আশীর্বাদ হিসাবে মনে করি। আমি শুনেছি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ভেঙে দেয়া এই মন্দিরটি সংস্কারে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার ও জনগণ সহায়তা করেছে। এই মন্দিরটি ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতীক।
ভারতের রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, এই অবিস্মরণীয় বছরে আমাদের দুই দেশ মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, দুই দেশের বন্ধুত্বের ৫০তম বার্ষিকী এবং ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করবে। আসুন এ বছরে আমরা আমাদের জাতির পিতাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজেদেরকে আবারও উৎসর্গ করি।
কোবিন্দ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বড় ধরনের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ভারতও প্রশংসনীয় প্রবৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে।
উভয় পক্ষ তাদের প্রবৃদ্ধিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই ও পরিবেশ-বান্ধব করার জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ আরও বলেছেন, আমি সবুজ শক্তি এবং পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিশাল সম্ভাবনা দেখছি।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দিকে যাত্রায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, দুইপক্ষের বন্ধুদের সঙ্গে মিলেমিশে আমরা বৃহত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম