November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, February 12th, 2022, 8:42 pm

বিপুলসংখ্যক অচল গাড়িতে মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যক্রম

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অর্ধেক গাড়িই অচল। অথচ বিদ্যুৎ বিভাগের নিয়মিত কার্যক্রম দেখভাল ও অভিযান পরিচালনায় জন্য যানবাহন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর বিদ্যুৎ জরুরি বিষয় হওয়ায় কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক সমাধান করতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ওই প্রয়োজনীয়তা আরো বাড়ে। কিন্তু বর্তমানে পিডিবির অর্ধেক গাড়ি অচল হওয়ার পাশাপাশি জনবল সঙ্কটও তীব্র। ফলে বিদ্যুৎ খাতের বার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ বিভাগ হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন গাড়ি ক্রয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হলেও তার অনুমোদন মিলছে না। ফলে পিছিয়ে পড়ছে বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যক্রম। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বিভিন্ন দপ্তরে ৫৭৫টি পিকআপ, প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস রয়েছে। তার মধ্যে ৩৭৭টি সচল থাকলেও ১৯৮টি যানবাহন অচল হয়ে পড়ে আছে। আর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহারের জন্য ১৮৯টি মোটরসাইকেলের মধ্যে ১৩১টি অচল। অর্থাৎ মাত্র ৫৮টি সচল। প্রতিষ্ঠানটির মোট ৭৬৪টি যানবাহনের মধ্যে ৩২৯টিই অচল। আর অচল হয়ে পড়ে থাকা গাড়িগুলোর অধিকাংশই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অচল ওসব যানবাহন নিলামে বিক্রির প্রস্তাব দেয়া হলেও তাতে সরকারের সাড়া মেলেনি।
সূত্র জানায়, পিডিবির বিভিন্ন দপ্তরে ১৮ হাজার ৩৯৪টি সেকশন রয়েছে। তার মধ্যে কষ্ট সেন্টার ২৮১টি। ওসব সেকশনে লোকবলের সংখ্যা ১২ হাজার ৩শ জন। অধিকাংশ দপ্তরে জনবল ঘাটতি রয়েছে। তবে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান। মূলত বিদ্যুৎ বিভাগে লোকবল ও যানবাহন দুটিরই ঘাটতি রয়েছে। তবে দফায় দফায় নিয়োগ প্রক্রিয়া আশার আলো দেখাচ্ছে। আশা করা যায় দ্রুতই জনবল ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু যানবাহনের ক্ষেত্রে সহসাই ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা দেখা না। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পিডিবি থেকে সংকটের বিষয়টি জানিয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জন্য গাড়ি কিনতে ২৮ কোটি টাকার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তবে সরকার এখনো ওই ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়নি। মূলত মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে সব ধরনের ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে তার আগের অর্থবছর (২০১৯-২০) ২৬টি নতুন গাড়ি কেনা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কেনা হয়েছিল ৩৫টি। বর্তমানে অচল হয়ে পড়ে থাকা গাড়িগুলোর মধ্যে কোনো কোনো গাড়ির মেয়াদকাল শেষ হয়ে গেছে। আবার অনেক গাড়ি দীর্ঘদিন চলার কারণে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মেরামতে অতিরিক্ত খরচ হতে পারে। সেজন্যই ওসব গাড়ি নিলামে বিক্রি করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান জানান, পিডিবিতে গাড়ি সংকট রয়েছে। পিডিবিতে পরিদর্শনকাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ওই কাজের জন্য পর্যাপ্ত যানবাহন প্রয়োজন। ফলে পিডিবিতে আরো কিছু গাড়ি প্রয়োজন তবে সরকারের পক্ষ থেকেও ক্রয়ের ব্যাপারে বেশকিছু স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। বিষয়গুলো সামঞ্জস্য করেই যানবাহন সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।