অনলাইন ডেস্ক :
নাজমুল হোসেন শান্ত, এক আক্ষেপের নাম! বয়সভিত্তিক ক্রিকেট পেরিয়ে সোজা চলে আসেন জাতীয় দলের রাডারে। দেশে-বিদেশে জাতীয় দলের সঙ্গে বাঁহাতি এই ব্যাটার নিয়মিত ঘুরে ঘুরে বহু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে নিজের নামের প্রতি এখন অবধি সুবিচার করতে পারেননি। বিশেষ করে সাদা বলের ক্রিকেটে তার পারফরম্যান্স ছন্নছাড়া। ফলে বিশ্বকাপের মতো একটি ইভেন্টে নাজমুল হোসেন শান্তর সুযোগ পাওয়াটা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। নির্বাচকদের এমন সিদ্ধান্তে সমালোচনা হচ্ছে সর্বত্র। শান্তর বিশ্বকাপে দলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করতেই প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর উত্তর, বিপিএলে শান্তর রেকর্ড দেখুন! টেস্ট ক্রিকেটে শান্তর পারফরম্যান্স মোটামুটি মানের হলেও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে তার পারফরম্যান্স একেবারেই হতাশাজনক। ১৩ ওয়ানডেতে ১৪.৫৩ গড়ে শান্তর রান ১৮৯। আর টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলের হয়ে ৯ ম্যাচে ১০৪.২২ স্ট্রাইক রেটে শান্তর রান মোটে ১৪৮। এমন পারফরম্যান্সে এশিয়া কাপের দল থেকেও বাদ পড়তে হয়েছিল শান্তকে। কিন্তু কিছু না করেই রহস্যময়ভাবে বিশ্বকাপ দলের অংশ হলেন তিনি। শান্তর এই অন্তর্ভুক্তি নিয়ে যুক্তিসঙ্গত কোনও ব্যাখ্যাও দিতে পারেননি মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্যর্থ হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কিছু ভালো ইনিংস আছে শান্তর। ২০২০ সালের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে শান্ত দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন। বিশেষ করে পাওয়ারপ্লেতে স্পিন বোলারের বিপক্ষে আগ্রাসী শান্তকে দেখা গেছে। কিন্তু জাতীয় দলে ফিরলেই শান্ত হারিয়ে যান! ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে দুটি সেঞ্চুরি থাকলেও জাতীয় দলে একটিও হাফসেঞ্চুরি নেই শান্তর। সবমিলিয়ে ৯৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা শান্তর রান ১ হাজার ৮৯৬। ১২২.২৬ স্ট্রাইক রেটে শান্ত ব্যাটিং করেছেন। ৬ হাফসেঞ্চুরি ছাড়া সেঞ্চুরি আছে দুটি। মূলত বিপিএলের রেকর্ডই শান্তকে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাইয়ে দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেছেন, ‘বিপিএলে শান্তর রেকর্ড দেখুন। ঘরোয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে ওর পারফরম্যান্স খারাপ না। বিপিএলে সেঞ্চুরিতে শান্তর রেকর্ড আছে। সবারই চাহিদা ছিল, তাই তাকে নেওয়া হয়েছে।’ তবে নির্বাচকের একার সিদ্ধান্তে শান্তকে বিশ্বকাপ দলে নেওয়া হয়নি। সবার সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ‘এখানে অনেক কিছু আলোচনা হয়েছে, অনেক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ব্যাকআপ একটা ওপেনারের জন্য। সবার সাথে আলোচনা করেই, সিদ্ধান্ত এসেছে। কারও দ্বিমত থাকেনি। সেজন্যই শান্তকে নেওয়া হয়েছে।’ ঘরোয়া ক্রিকেটে শান্তর পারফরম্যান্স থাকলেও সাদা বলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শান্ত নিষ্প্রভ। তারপরও অন্য কোচদের মতো শ্রীরামও শান্তকে নিয়ে বড় প্রত্যাশা করছেন, ‘সে ভালো ক্রিকেটার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য যে মানসিকতা দরকার সেটা তার রয়েছে। তাকে সামান্য সময় ব্যাটিংয়ে দেখে এবং কথা বলে বুঝেছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে পারবে। বাউন্সি উইকেটে ভালো করার সামর্থ্য রয়েছে। আমরা যে ইমপ্যাক্ট খোঁজার চেষ্টায় আছি শান্তর সব গুণ রয়েছে।’ নেটে শান্তর ব্যাটিং দেখে যে কেউই প্রশংসা করবে। কিন্তু মাঠে সেই শান্তকে খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও এর উত্তর পরে দেবেন বলে জানিয়ে গেলেন শ্রীরাম, ‘এই উত্তরটার জন্য আপনাকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা