November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, April 10th, 2023, 9:51 pm

শিক্ষকের অভাবে মেডিকেল কলেজগুলোতে হাতুড়ে চিকিৎসক সৃষ্টির আশঙ্কা বাড়ছে

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তীব্র জনবল সঙ্কটে দেশের মেডিকেল কলেজগুলো। যদিও সরকার দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক তৈরির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে। পাশাপাশি বাড়ছে বেসরকারি পর্যায়ের চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। কিন্তু অবকাঠামো, জনবল ও দক্ষ শিক্ষক সংকটের কারণে ঠিকমতো চলছে না অনেক মেডিকেল কলেজ। অধ্যক্ষ কিংবা উপাধ্যক্ষ ছাড়াই কোনো কোনো মেডিকেল কলেজ চলছে। ফলে মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক বা শিক্ষা কার্যক্রম। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে হাতুড়ে চিকিৎসকই বেশি তৈরির হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি ১১৩টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে সরকারি কলেজ ৩৬টি। কিন্তু দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় শিক্ষকের যতো পদ আছে তার প্রায় অর্ধেকই খালি। দেশে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৫ হাজার ৫৮৯টি অনুমোদিত ক্যাডার পদের বিপরীতে ২ হাজার ৬০৫টি শিক্ষক পদ খালি রয়েছে। মেডিকেল কলেজগুলোয় সরাসরি শিক্ষক নিয়োগ করা হয় না। প্রভাষক পদে মেডিকেল অফিসার থেকে বিষয়ভিত্তিক পদায়ন করা হয়। সরকারি মেডিকেলে বেসিক সাবজেক্ট বা মৌলিক বিষয়গুলোয় প্রায় দুই হাজার পদের মধ্যে ৭শরও বেশি শূন্য। তার মধ্যে অধ্যাপক পদেসবচেয়ে বেশি সংকট। ওসব কলেজে অধ্যাপকের ২০৪টি পদের বিপরীতে মাত্র ৭০ জন কাজ করছেন। যদিও চিকিৎসকদের অনেকের অভিযোগ, নিয়মিত পদোন্নতি না হওয়ার কারণে অনেক বিষয়ে উচ্চপদে শিক্ষক আসার সুযোগ পাচ্ছে না। তবে একটি মেডিকেল কলেজে কতোজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন তা বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল নির্ধারণ করে। অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, ফার্মাকোলজি, কমিউনিটি মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, অ্যানেস্থেশিয়া, ভাইরোলজিসহ কিছু বিষয়কে বেসিক সাবজেক্ট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তার মধ্যে কিছু বিষয়ে কয়েকটি কলেজে শুধু প্রভাষক পদের শিক্ষক রয়েছেন। এর ওপরের পদগুলোয় নিয়োগের জন্য লোকবলই নেই। সূত্র জানায়, সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আওতা অনেক বেড়েছে। কিন্তু তার বিপরীতে সেভাবে বাড়েনি জনবল কাঠামো। আবার অনুমোদিত জনবল কাঠামোরও পূর্ণাঙ্গ নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। তাতে ক্রমবর্ধমান বিপুল চাহিদার বিপরীতে জনবল ঘাটতি নিয়ে কাক্সিক্ষত মাত্রায় সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্য ব্যাহত হচ্ছে। গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে ১৩৭টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে ৪৪ জন নিয়মিত ও ১৪ জন সংযুক্তিতে কর্মরত আছেন। মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজে ৭৪টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে নিয়মিত কর্মরত আছেন ৫৫ জন। মুগদা মেডিকেল কলেজে ৯৯টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে ৭৯ জন নিয়মিত কর্মরত আছেন এবং সংযুক্তিতে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন। তাছাড়া নওগাঁ মেডিকেল কলেজে অর্থনৈতিক কোড সৃষ্টি না হওয়ায় ৭৬টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে ৩৬ জন সংযুক্তিতে কর্মরত আছেন। কিন্তু মেডিকেল শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানো হলেই দক্ষ চিকিৎসক তৈরি করা সম্ভব হবে। সেজন্যই সব স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় জনবল পদায়ন, শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি।