নিজস্ব প্রতিবেদক :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় নয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় ফাঁসির দ-প্রাপ্ত দুইজনকে হাইকোর্টের খালাস দেয়া আদেশ স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একইসঙ্গে আগামী ১ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়েছে। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ড. মো. বশির উল্লাহ্। খালাস স্থগিত হওয়া আসামি দুজন হলেন- ওই শিশুর মামাতো ভাই উপজেলার বুখাইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামের মেহেদী হাসান ওরফে স্বপন (২২) ও একই গ্রামের সুমন জমাদ্দার (২০)। রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৯ জুলাই) আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চুয়াল চেম্বারজজ আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে সোমবার (১৯ জুলাই) আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ড. মো. বশির উল্লাহ্। এর আগে গত ৩০ জুন এ মামলায় ফাঁসির দ-প্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এসএম আবদুল মবিনের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে ওইদিন আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মো. মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. গোলাম কিবরিয়া দুজনকে মৃত্যুদ- দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর সকালে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মাঠে যায় ওই শিশু। দুপুরেও ঘরে না ফেরায় স্বজনরা তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরদিন দুপুরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে তার উলঙ্গ ও ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তদন্তে দেখা যায়, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস এ ঘটনায় ওই শিশুর মামাতো ভাই মেহেদী হাসান স্বপনের সংশ্লিষ্টতা পান। পরে মেহেদী ও তার সহযোগী সুমন জমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। সুমন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, তিনি ও মেহেদী মেয়েটিকে বাগডাসা দেখানোর লোভ দেখিয়ে বাগানে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি যাতে জানাজানি না হয় সে জন্য পরে তারা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করেন। এ মামলায় তদন্ত শেষ করে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি এ দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। ৭ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামি সুমন জমাদ্দার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরবর্তীতে এই জবানবন্দি প্রত্যাহার করেন। রাষ্ট্রপক্ষ সর্বমোট ১৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। অপরপক্ষে আসামিদ্বয় ১১ জন সাক্ষী হাজির করে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম