আকাশে ঝলমলে রোদ, উপকূলে ফিরে এসেছে স্বস্তি
জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী (কলাপাড়া) :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাগর পারের মানুষ র্নিঘুম রাত কাটিয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে। এসব মানুষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’র আতঙ্কে বাড়ি ঘর ছেড়ে উপজেলার ১৯টি মুজিব কেল্লাসহ ১৭৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রে রাত্রী যাপন করেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা তাদের নিজ গৃহে ফিরে গেছেন। এদিকে ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং’র আঘাতে কিছু গাছপালা ও কাঁচা ঘরবাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু স্থানে বৈদ্যুতিক লাইনের উপর গাছপালা ভেঙ্গে পারায় সাময়িক সময়ে জন্য বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ ছিলো। তবে ভারি বর্ষনের কারণে আমন ও সবজির ক্ষেতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্নিঝড় সিত্রাং। সিপিপি সদস্যরা সোমবার সকাল থেকে উপজেলার গ্রামে গ্রামে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেতের প্রচার করেন। এর ফলে সাগরপারের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। এরা বাড়ি ঘর ছেড়ে গৃহপালিত পশুপাখি ও মালামাল নিয়ে ছুটে যায় আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে। র্নিঘুম রাত কাটানোর পর বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষ মঙ্গলবার সকালেই যার যার বাড়ি ফিরেছেন। সকাল নয়টা থেকে আকাশ পরিষ্কার হয়ে ঝলমলে রোদ উঠে। এতে যেন গোটা উপকূূলের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সিত্রাং’র প্রভাবে এলাকায় কিছু গাছ ভেঙে পড়া ছাড়া তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে আসা দুই সন্তানের জননী নাজমা বেগম বলেন, সিডরে মোরা চুবানি খাইছি। ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত মাইকে প্রচার শুনে পোলাপান লইয়া আশ্রয় নেতে আইছি। সকালে আকাশ পরিষ্কার হইয়া গেছে। তাই মোরা বাড়িতে ফিরছি।
তবে একাধিক কৃষকরা জানান, বৃষ্টির কারনে ক্ষেতে পানি যমে গেছে। এ কারনে সবজির চারা পচে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত ১৮টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র থেকে প্রায় ২ হাজার মানুষ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
ধনখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার জানান, সোমবার রাতে অন্তত ২০ থেকে ২২টি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে কয়েক হাজার মানুষ আতঙ্কে আশ্রয় নিয়েছে। তারা সবাই র্নিঘুম রাত কাটিয়েছেন। মঙ্গলবার সাকালে আকাশ পরিষ্কার হওয়ার সাথে সাথেই ওইসব মানুষ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। তবে সিত্রাং’র প্রভাবে বেশ কিছু গাছপালা ভেঙ্গে বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে রামনাবাদ নদীর পানি প্রবেশ করে পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’র প্রভাবে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধের বাহিরে থাকা পুকুর ও মাছের ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ৩২৭ টি পুকুর ও ঘেরের তালিকা করা হয়েছে। এতে আনুমানিক ২৬ লক্ষ টাকা ক্ষতি হতে পারে বলে এই মৎস্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শঙ্কর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, এ উপজেলায় বড় ধরনের তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে ছিল তার সবাই যার যার বাড়ি ফিরে গেছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি