May 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, May 23rd, 2023, 7:39 pm

হৃদির প্রথম চলচ্চিত্র ‘১৯৭১ সেইসব দিন’

অনলাইন ডেস্ক :

হৃদি হকের প্রথম চলচ্চিত্র আসছে। ছবির নাম ‘১৯৭১ সেইসব দিন’। এ খবর অনেকদিন ধরেই প্রচার ও প্রকাশ পাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে অভিনেত্রী ও নাট্য-পরিচালক হৃদি হক প্রথমবারের মতো পরিচালনা করছেন সিনেমা। ছবিটির প্রচারণায় এক দারুণ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী হাতে আঁকা সিনেমা ক্যানভাস। আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে চিত্রকরদের আঁকা সিনেমার পেইন্টেড ব্যানার। যা সিনেমা হলের সামনে শোভা পেতো। এ কাজের কিংবদন্তি একজন শিল্পী রয়েছেন যার নাম মো. শোয়েব। যিনি নিজ হাতে এঁকে কয়েক হাজার চলচ্চিত্রের ব্যানার করেছেন। যুগ বদলেছে। সিনেমার ভাষার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে আমাদের চলচ্চিত্রের প্রচার ও বিপণন প্রক্রিয়া। সেই বিপণনের জগতে আজ এক ক্লিকেই ডিজিটাল গ্রাফিক্স করা ব্যানার কয়েকশত ছেপে ফেলা যায়!

কিন্তু ছবিটি যেহেতু দেশমাতৃকার, মুক্তিযুদ্ধের গল্পের তাই শুধু যুদ্ধটাই না, পুরো প্রেক্ষাপটটা ফেরাতেই সেই শিল্পীকে দিয়ে আঁকানোর উদ্যোগ নিয়েছেন বিশাল সাইজের ব্যানার। এ উদ্যোগ প্রসঙ্গে ছবিটির নির্মাতা হৃদি হক বলেন, আমরা চেয়েছি আমাদের শেকড়ের মানুষদের সম্মান দিতে। একই সঙ্গে ছবিটির প্রেক্ষাপটের সঙ্গেও এটি দারুণ মানানসই। তাই আমরা তাকে খুঁজে বের করে তার কাজটিই করার জন্য যখন অনুরোধ করলাম। উনি খুবই অবাক হলেন। ভীষণ গুণী একজন শিল্পী। অথচ নিভৃতচারী। কাজটি করতে গিয়ে যেন বারবার নস্টালজিক হয়ে পড়ছেন। ঢাকার শ্যামলীতে ছবিটির এই বিশাল সাইজের ব্যানারের কাজটি চলছে। কিংবদন্তি সেই শিল্পী মো. শোয়েবের বয়স সত্তরোর্ধ।

এই বয়সে চলচ্চিত্রের একঝাঁক তরুণ কুশলীরা যে তাকে দিয়ে সেই পুরনো সিনেমার ব্যানার করাচ্ছেন, তাতেই বারবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন তিনি। ছবিটি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘১৯৭১ সেইসব দিন’ নামের সিনেমাটির শুটিং শেষ হয়ে এখন মুক্তির অপেক্ষায়। ঠাকুরগাঁও জেলার একটি গ্রাম থেকে এর শুটিং শুরু হয়। সিনেমাটি নিয়ে হৃদি হক আরও বলেন, যেহেতু ছবিটার প্রেক্ষাপট মুক্তিযুদ্ধ। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই এর ক্যানভাসটাও বড়। ১৯৭১ সালের একটি পরিবার এবং সেই সময়ের কিছু ঘটনা নিয়েই এই সিনেমার গল্প। ছবিটির অন্যতম চরিত্রে কাজ করেছেন সাজু খাদেম। সাজু নিজেও একজন গুণী চিত্রকর। তিনি এ উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলেন, আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে শোয়েব ভাইয়ের খবরটি পাই। এরপরই আইডিয়াটা ডেভলপ করে হৃদি। শোয়েব ভাই কিন্তু তার চিত্রশিল্পের জন্য বৃটিশ সরকার থেকেও সম্মাননা পেয়েছেন।

দেশের বাইরে একাধিকবার রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে সম্মান জানানো হয়েছে। বরং আমরাই দেশে তাকে সেভাবে সম্মান জানাতে পারিনি। ভীষণ প্রচারবিমুখ ও নিভৃতচারী মানুষ। তিনি এই বয়সে কাজটি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা একটি স্মৃতিস্বাক্ষর নিতে পারছি। আমাদের এই ছবিটির জন্য এটাও অনেক বড় প্রাপ্তিযোগ। সিনেমাটিতে অভিনয় করছেন মামুনুর রশীদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, শিল্পী সরকার অপু, ফেরদৌস, তারিন, লিটু আনাম, সজল, সাজু খাদেম, সানজিদা প্রীতি প্রমুখ। সিনেমাটি পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয়ও করছেন হৃদি হক।

সিনেমাটির মূল গল্প ভাবনা ড. ইনামুল হকের। তারই সুযোগ্য কন্যা ছবিটি নির্মাণ করলেন।ছবিটির শুরুটা দেখে ও জেনে যেতে পেরেছিলেন ড. ইনামুল হক। ছবিটির মুক্তি তাই হৃদি তার কিংবদন্তি বাবার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ হিসেবেই হয়ত দেখছেন। হৃদি হক একজন অভিনেত্রী একই সঙ্গে একজন নাট্যকার ও নাট্য কর্মী। কাজ করছেন নাগরিক নাট্যাঙ্গনে। তিনি অভিনয় শেখানোর একটি স্কুল পরিচালনা করছেন। হৃদি জানালেন, করোনার জন্য দীর্ঘদিন মঞ্চের কাজ বন্ধ ছিল। আমি নাগরিক নাট্যাঙ্গন ইনস্টিটিউট অব ড্রামা’র পরিচালনা পরিষদের প্রধান। বর্তমানে ক্লাস চলছে। এ নিয়ে ব্যস্ততা আছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর থেকে নিয়মিত নাটকের প্রদর্শনীর কাজ চলছে। হূদি বলেন, এখন ছবিটা মুক্তির জন্যই সকল প্রস্তুতি আমাদের। একটি দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল হিসেবে দর্শকদের ভালবাসা কুড়াবো-সেই প্রত্যাশাটুকু তো একজন শিল্পী হিসেবে রয়েই যায়। সেই অপেক্ষাতেই আছি।