অনলাইন ডেস্ক :
মানব মস্তিস্কে প্রথম বারের মতো চিপ প্রতিস্থাপন করার কথা জানিয়েছেন ইলন মাস্ক। তিনি জানান, তার স্টার্ট আপ সংস্থা নিউরালিঙ্ক মানুষের মস্তিষ্কে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছে। প্রাথমিক ফলাফল বেশ চিত্তাকর্ষক। মাস্ক আরও জানিয়েছেন,চিপ প্রতিস্থাপন করার পর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন ওই রোগী। মস্তিষ্কের সঙ্গে ব্রেন চিপ মানিয়ে নিয়েছে। যা রোগ সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তবে এই পরীক্ষা নিয়ে এখনই বিস্তারিত তথ্য সামনে আনেননি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এর আগে গত বছর ইলন মাস্কের সংস্থাকে এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছিল আমেরিকার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা। উদ্দেশ্য ছিল পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীকে সুস্থ করে তোলা।
মাস্ক জানান, তার সংস্থার উদ্দেশ্য কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্ককে যুক্ত করে জটিল নিউরোলজিক্যাল সমস্যার সমাধান করা। নিউরালিঙ্কের তৈরি এই যন্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টেলিপ্যাথি’। ফোন কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে এই যন্ত্র পরিচালনা করা যাবে। সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ মাস্ক জানিয়েছেন, কী ভাবে ওই বৈদ্যুতিন যন্ত্র মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযোগ করে। প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র বেশ উপযোগী বলেও দাবি মাস্কের। মাস্কের কথায়, “মনে করুন, স্টিফেন হকিং একজন নিলামকারী কিংবা টাইপিস্টের চেয়ে দ্রুত অন্যের সঙ্গে ভাবের আদান প্রদান করছেন।”
সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই পরীক্ষায় একটি রোবট মস্তিষ্কের একটি বিশেষ এলাকায় সার্জারি করে একটি ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) স্থাপন করে। মস্তিষ্কের ওই বিশেষ এলাকাটি মানুষের নড়াচড়ার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে নিউরালিংক এর আগে জানিয়েছিল। কোম্পানিটি চায়, মানুষ যেন কেবল তার চিন্তার মাধ্যমেই একটি কম্পিউটার কারসর কিংবা কি-বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এদিকে মাস্কের সংস্থা নিউরালিংক জানিয়েছে, চিপের মধ্যে যে ‘অতি সূক্ষ্ম’ সুতার মতো বস্তু আছে, তা পরীক্ষায় অংশ নেয়া মানুষের মস্তিষ্কে সংকেত পাঠাতে সাহায্য করে।
তবে মাস্কের এই ব্রেন চিপ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে, মানব দেহের জন্য তা কতটা নিরাপদ? লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক অ্যান ভ্যানহস্টেনবার্গ জানিয়েছেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্র নির্মাতা যে কোনো সংস্থার ক্ষেত্রেই এ ধরনের পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ধরনের পরীক্ষা আগেও হয়েছে। ব্রেন চিপ ইমপ্ল্যান্ট কমিউনিটি নিয়ে বহু সংস্থাই কাজ করেছে। তার মধ্যে অল্প কিছু সংস্থাই মানবশরীরে এ ধরনের যন্ত্র বসাতে পেরেছে। অ্যানের দাবি, মাস্কের সংস্থা সেই ‘কমিউনিটি’তে যোগ দিল। এর আগে সুইজারল্যান্ডের একটি সংস্থাও একই ভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীর মস্তিষ্কে চিন্তাভাবনার সঞ্চারের মাধ্যমে হাঁটতে সাহায্য করেছে। উটার একটি সংস্থা ২০০৪ সালে প্রথম বার ব্রেন-কম্পিউটার সংযোগ ঘটিয়েছিল। তবে মাস্কের দাবি, তার সংস্থার তৈরি ব্রেন মেশিন অবসাদ থেকে মুক্ত করতে পারে। সারাবে মস্তিষ্কের ক্ষতও। মাস্কের দাবি, ডিমেনশিয়া, পার্কিনসন্সের মতো রোগেও সারাতে কার্যকর ওই যন্ত্র। এমনকি স্নায়ুর জটিল রোগ নিরাময়েও কার্যকরী।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু