জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
একের পর এক দুর্ঘটনায় যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে ওঠেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। প্রায় প্রতিদিনই এই সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষত মহাসড়কের সিলেট অংশে দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি ওসমানীনগর এলাকাতে।
কেন এই সড়কে এত দুর্ঘটনা? –সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপ্রশস্ত সড়ক, অপ্রশিক্ষিত চালক, বেপরোয়া গতি, আঁকাবাঁকা সড়ক, যত্রতত্র স্পিড বেকার, সাইনিং রোড মার্কিং এর অভাবসহ অনেক কিছু। তবে সওজ সিলেট অফিস বলছে দ্রততার সহিত সড়ক সংস্কারে ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা। পরিবহন নেতারা বলছে দুর পাল্লার বাসগুলিতে অতিরিক্ত চালক নিয়োগ দিতে হবে মালিক পক্ষকে।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিলেট ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার রশিদপুরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসকসহ ৮ জন, আহত হন আরও অন্তত ২০ জন।
এ ভাবেই পুরো বছর জুড়ে সড়ক দুর্ঘটনার নিউজের শিরোনাম ছিলও সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ওসমানীনগর এরিয়া এবং সিলেটে মহানগরের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন এলাকা।
পুলিশের দেওয়া সূত্র মতে ২৪ জুলাই ২০২০ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ সাল পর্যন্ত সিলেট ঢাকা মহাসড়কের ওসমানিনগর থানাধীন মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে আর পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অর্ধশতাধিক এর বেশি মানুষ। যার সব দুর্ঘটনা ঘটেছে ভোর বেলা।
সিলেট হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ জানান, বেপরোয়া গতি, বিপদজনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ত্রুটি, ফিটনেস-বিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা ও ঘুমন্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, যত্র তত্র স্পিড বেকার, এবং পর্যাপ্ত রোড মার্কিং না থাকার কারণে ঘটছে এমন দুর্ঘটনা।
সিলেট পুলিশ সুপার মোঃ ফরিদ উদ্দিন জানান, ২৪৩ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে ঢাকা থেকে সিলেট আসতে একজন ড্রাইভারের সময় ব্যায় হয় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। দীর্ঘ সময় গাড়ি ড্রাইভ করার পর ক্লান্ত হয়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে যান অনেক ড্রাইভার যা দুর্ঘটনার জন্য অনেকটা দায়ী। তাছাড়া আঁকাবাঁকা স্থানগুলোতে নেই সংকেত চিহ্ন।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.আলমগীর কবির বলেন, দুর্ঘটনা রোধে গাড়ির চালকদের ডোপ টেস্ট সামাজিক সচেতনতা, সড়ক মেরামত, ও আঁকাবাঁকা স্থান দুর্ঘটনা প্রবণ ডেঞ্জারজোন স্থানগুলি জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করা প্রয়োজন।
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী মোঃ ময়নুল ইসলাম জানান, দূরপাল্লার বাসগুলো দীর্ঘ সড়কে এক ড্রাইভার দিয়ে পরিচালনা না করে যেন দুই জন ড্রাইভার দেওয়া হয়।
সিলেট সড়ক অধিদপ্তরের উপ-তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরে আলম সিদ্দিক জানান, দ্রুততার সহিত সড়ক মেরামতসহ দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার হোসেন শামিম সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যাক্তি। মহাসড়কে রোড মার্কিং ও ছোট ছোট ভাঙ্গন দ্রুততার সহিত মেরামত না করলে আসছে শীত মৌসুমে বড় বড় দুর্ঘটনা বাড়বে এমন টা আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি