April 30, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, January 2nd, 2022, 8:48 pm

গঙ্গাচড়ায় বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিস্তার চরে ব্যাপক চাষাবাদ

জেলা প্রতিনিধি, রংপুুর :
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চিকচিক বালুচর ঢাকা পড়েছে সবুজের চাদরে। বন্যার ধকল কাটিয়ে তিস্তার চরে চলছে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে গঙ্গাচড়ায় জেগে ওঠা তিস্তার ১৮টি চরে উৎপাদন হবে প্রায় ২০ কোটি টাকার ফসল। সরজমিনে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমের প্রলয়নকারী তিস্তায় এখন নেই তেমন প্রবাহ। শীতের বালুচরে সবুজের সমারোহ। চরগুলোতে ভুট্টা, সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, তরমুজ, মিষ্টিকুমড়া,ধনেপাতা, তামাকসহ বিভিন্ন জাতের ফসল ও স্ববজি চাষ করছে কৃষকরা। সেই ফসল ও স্ববজি ঘিরেই আগামীর স্বপ্ন বুনছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ। মটুকপুর, চিলাখাল, চর নোহালী, আলাল, ইশোরকোল, খলাইয়ের চর, কাশিয়া বাড়ীর চর, বিনবিনা, চল্লিশসালসহ ১৮টি চরে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে এসব ফসল। গেল বন্যায় কাটাধানসহ সহায় সম্বল হারানো মানুষগুলো এখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছে ফসল উৎপাদনে। চল্লিশসালের চরের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত আমন মৌসুমে হঠাৎ বন্যার কারণে ধান ঘরে তুলতে পারি নাই। জমিতে কাটি থোয়া ধান বানের পানিতে তলিয়ে পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। স্ত্রী, সন্তান, বাবা ও মাকে ভাত খাওয়ার মতো কোন ধান ঘরে তুলতে পারি নাই। এবার ৯০ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করছি। ভুট্টা লাগার পরে এখন সার আর তেলের দাম বেড়ে গেছে। কাটা মাড়াইর সময় যদি ভুট্টার দাম না বাড়ে তাহলে এবারও আমরা মাঠে মারা যাব। তার উপর এই আবাদ করছি দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সুদের টাকা নিয়ে। ফসল উঠলে বিক্রি করি আগে তাদের সুদসহ টাকা দিতে হবে। তাই সরকারের কাছে দাবি তেল ও সারের দাম কমে দিলে আমরা স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকতে পারব। চিলাখাল চরের হোদা মিয়া, বিনবিনার চরের আইয়ুব জানান, এবার বন্যায় তাদের আবাদকৃত ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ধার দেনা করে ভুট্টা, তামাক, আলু চাষাবাদ করেছেন। গঙ্গাচড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, গত বর্ষায় তিস্তায় উজানের ঢলে গঙ্গাচড়ায় রাস্তা ঘাট, উপবাঁধ ভেঙ্গে ৫শত হেক্টর জমিতে পানি প্রবেশ করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকার চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রণোদনার আওতায় আনা হচ্ছে। কৃষকরা যেভাবে ফসলের পরিচর্যা করছে তাতে এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকলে প্রায় ২০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে।