জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জরুরি সংস্কার বা মেরামত না হওয়ায় জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। প্রায়ই এ সড়কে ঘটে কোনো কোনো দুর্ঘটনা। বানের পানি নেমে গেলেও এ সড়কে এখন পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু হয়নি। ফলে ভাঙা সড়কের অজুহাতে যাত্রীদের পকেট কাটে ছোট যানবাহনগুলো। তবে আপাতত খন্ডকালীন সড়ক সংস্কারের জন্য ইট সলিং করা হবে এবং জরুরী সংস্কার কাজের জন্য প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে- জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, গত ১৭ জুন বন্যা আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটারের বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে সড়কের কয়েকটি স্থান অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ ভেঙে যায়। আরও কয়েকটি স্থানে বিশাল আকৃতির গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের বালাগঞ্জ অংশে কাশীপুর, জগৎপুর, নবীনগর, উপজেলা সদর ও ওসমানীনগর অংশে আলীপুর, লামাপাড়া ও পাঁচপাড়া এলাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সংস্কারে দুই উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দ্রুত উদ্যোগ না সড়কটির বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সড়কটি ভেঙে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। গেল ১৩ জুলাই বালাগঞ্জের কাশীপুর এলাকায় সড়কের গর্তে পড়ে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা উল্টে গিয়ে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।
এদিকে, বন্যার পানি নেমে গেলেও সড়ক ভাঙা থাকায় বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় নি¤œবিত্ত যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এখন বালাগঞ্জ থেকে তাজপুর যাতায়াতে যাত্রী সাধারণের একমাত্র ভরসা সিএনজি চালিত অটোরিকশা। তবে সড়ক ভাঙার কারণে তুলনামূলক বেশি টাকা আদায় করছেন চালকেরা। বন্যার পূর্বে বালাগঞ্জ থেকে তাজপুর পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। যা দূরত্বের তুলনায় ভাড়া অনেকটাই বেশি ছিল। বর্তমানে যাত্রীদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ১শ’ টাকা এমনকি ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে হচ্ছে বসচা।
গত ১৪ জুলাই বালাগঞ্জের আদিত্যপুর মোড়ে ভাড়া নিয়ে বসচার জেরে একজন বৃদ্ধ যাত্রীর গায়ে হাত তুলেন সিএনজি অটোরিকশা চালক।
রিফাতপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মন্নান বলেন, বন্যায় এই সড়কটির খুবই ক্ষতি হয়েছে। পানি কমার পর এখন গাড়ি চলাচল করলেও যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। এরমধ্যে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
ওসমানীনগর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আপদকালীন সময়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতর থেকে পাওয়া বরাদ্দ দিয়ে খ-কালীন কাজের অংশ হিসেবে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ইট সলিং করা হবে।
বালাগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোস্তাকিম শরিফ সাইদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের বালাগঞ্জ অংশ জরুরি সংস্কারের জন্য ১১ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি