জেলা প্রতিনিধি, শেরপুর (শ্রীবরদী):
শেরপুরের শ্রীবরদীতে পৈত্রিক সম্পত্তিতে স্থাপিত দোকানঘরে সন্ত্রাসী হামলা-ভাংচুর, মালামাল লুটপাট, আধাপাকা বোরো ধান কেটে ক্ষতি সাধন, ভূমি জবর দখল ও প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ মে শনিবার শহরের মাধবপুরস্থ শেরপুর প্রেসক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী শ্রীবরদী উপজেলার উত্তর মাটিয়াকুড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবু হাসেম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শ্রীবরদী উপজেলার গোশাইপুর ইউনিয়নের গাবতলী বাজারে আমার বিআরএস রেকর্ডভুক্ত পৈত্রিক এক জমিতে প্রায় ৩০ বছর যাবত পিতার নামে ছাত্তার মার্কেট নির্মাণ করে ওই মার্কেটের ১৪টি দোকানঘর ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলাম। সম্প্রতি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উত্তর মাটিয়াকুড়া গ্রামের অধিবাসী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার আমিনুল ইসলাম, ফারুক মিয়া ও ইউপি সদস্য সাজু মিয়ার নেতৃত্বে স্থানীয় ৫০/৬০ জনের একটি চক্র দিনেদুপুরে সন্ত্রাসী হামলায় ওই মার্কেটের একটি পাকা মনোহারী দোকানঘর ভেঙে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি এবং দোকানের ১ লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। সেইসাথে ২ শতাংশ জমির আধাপাকা বোরো ধানসহ ১৭ শতাংশ জমির পাকা বোরো ধান কেটে নিয়ে যায়।
এরপর প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা মূল্যের ওই জমি জবর দখলে নিয়ে নিজেদের সুবিধার জন্য রাস্তার নামে মাটি ভরাট করে ফেলে। এছাড়াও তারা আমার বাড়িতে হামলা করে আমার পরিবারের সবাইকে মারপিট করে। তাদের সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে প্রাণনাশের হুমকিতে আমি পরিবারের লোকজন নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি। আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে গত ২ মে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেছি। মামলাটির তদন্ত চলছে। কিন্তু ওই মামলার পর ১০ মে আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একই চক্রের লোকজন আমার স্বত্বদখলীয় ২৫ শতাংশ জমির বোরো পাকা কাটা ধান চুরি করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের জানানোর পরও তারা আমাকে সহযোগিতার পরিবর্তে উল্টো ওই সন্ত্রাসী চক্রকেই শেল্টার দিচ্ছেন। এজন্য তিনি শেরপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ দায়িত্বশীল সকল মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন। সেইসাথে ঘটনার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও জড়িতদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন। ওইসময় হাসেমের মা জহুরা বেগম, বিধবা বোন আমিরন বেগম, ভাগনে মনির হোসেনসহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার আমিনুল ইসলাম দম্ভসুরে বলেন, গাবতলী বাজার হতে পাশের খলশেকুড়ি বিলে যাতায়াতের বিকল্প রাস্তা না থাকায় আমরা দোকান ঘর ভেঙে রাস্তা করে দিয়েছি। বিষয়টি সবাইকে জানানো হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। অন্যের রেকর্ডিয় সম্পত্তিতে জোর করে দোকানঘর ভেঙে রাস্তা নির্মাণ করা আইনসম্মত নয়।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি