প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো আপত্তি নেই। তবে জ্বালাও-পোড়াও সহ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো জ্বালাও-পোড়াও সহ্য করি না। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু তারা যেকোনো আন্দোলন বা সংগ্রাম করুক তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক (বিপিএএ)-২০২৩ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য কর্মক্ষমতার জন্য ২৮ জন কর্মকর্তা ও দুইটি সরকারি দপ্তরকে পুরস্কার দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সমর্থন দেয়নি, তাদের মনের শত্রুতা এখনো কাটেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এটিকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই বাংলাদেশকে অবশ্যই অগ্রসর হতে হবে।
প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যতদিন জনগণ সরকারের সঙ্গে থাকবে ততদিন বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কারোর বিষণ্ণ মুখ দেখতে চান না বরং সবাইকে খুশি এবং হাসিমুখে দেখতে চান।
শেখ হাসিনা বলেন, জীবনে সমস্যা থাকা স্বাভাবিক। তবে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে মনোবল ও শক্তি প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমি এটা বিশ্বাস করি যে, এই মনোবল নিয়ে এগিয়ে গেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে “ইনশাআল্লাহ”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার নিম্নবিত্তসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের ভোগান্তি শহরাঞ্চলের মতো গ্রামাঞ্চলে ততটা নয়।
প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। কারণ জনগণের সেবা করা তাদের দায়িত্ব।
সরকারি কর্মকর্তাদের সর্বদা নতুন নতুন উদ্ভাবনের করতে আহ্বান জানান। তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সেসব উদ্ভাবনী কাজে লাগিয়ে দেশকে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এগিয়ে নিতে বলেন।
তিনি বলেন, তরুণ কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্ভাবনী শক্তি অনেক বেশি। এ ছাড়া এখন নতুন প্রযুক্তির যুগ।
তিনি আরও বলেন, আপনি যখন নিজ নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করেন, সে সময় চিন্তা করুন কী কী উদ্ভাবন করা যায় এবং কীভাবে দেশকে আরও এগিয়ে নেওয়া যাওয়া যায়।
জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা, মননশীলতা এবং উদ্ভাবনী প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করার জন্য ২০১৬ সালে বিভিন্ন বিভাগের অধীনে পুরস্কারটি চালু করা হয়েছিল।
প্রতি বছর ২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস পালিত হয়। কিন্তু জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরের তারিখের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় এ বছরের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ২৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়নি।
এ পুরস্কার বিজয়ীরা তাদের নামের শেষে বিপিএএ পদবি ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিটি বিজয়ীকে একটি স্বর্ণপদক (১৫ গ্রাম ওজনের) এবং একটি রাষ্ট্রীয় মনোগ্রামসহ একটি প্রশংসাপত্র দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ব্যক্তিগত অবদানের জন্য দেওয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা। দলগত অবদানের জন্য দেওয়া হয়েছে ৫ লাখ টাকা।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন- জনপ্রশাসন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচএন আশেকুর রহমান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বক্তব্য রাখেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২