May 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, October 9th, 2023, 8:06 pm

ওপেনিং নিয়ে চিন্তার কিছু নেই: নাফিস

অনলাইন ডেস্ক :

বিশ্বকাপে নিয়মিত ওপেনার তামিম ইকবাল নেই। এতদিন তার সঙ্গী হয়ে থাকা লিটন দাসও নেই চেনা ছন্দে। তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম প্রস্তুতি ম্যাচে রান পেলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ছিলেন ব্যর্থ। মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে নামবে সাকিব আল হাসানের দল। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ওপেনিং নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছেই না। যদিও সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস মনে করেন, ওপেনিং নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। গত বছরটি অসাধারণ কাটালেও চলতি বছর রান খরায় লিটন। ১৮ ম্যাচ খেলে ৩১৮ রান করতে পেরেছেন। তামিমের অবর্তমানে ওপেনিংয়ে তার ওপরই আস্থা রাখা হচ্ছিল। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি ডানহাতি ব্যাটার।

অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিমকে নিয়েও বড় আশা ছিল। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ৮৪ ও ৪৫ রান করলেও বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে মাত্র ৫ রানে দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হয়েছেন। ওপেনিং নিয়ে যখন অনেক চিন্তা সাবেক ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফিসবলেছেন, ‘প্রথমত ওপেনিং নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র কনসার্ন নই। যেহেতু আমি নিজেও ওপেনিং ব্যাটার ছিলাম, জানি ওপেনিংয়ে ব্যাট করা কঠিন। শুরুতে ১/২ টা উইকেট পড়বেই, সেটা যেমন উইকেটই হোক না কেন। তানজিদ তামিম অনুশীলন ম্যাচগুলোতে ভালো খেলেছে, সে টাচেই আছে। লিটনের ধারাবাহিক ভাবে রান করার অভিজ্ঞতা আছে। ওর বর্তমান এই পারফরম্যান্স নিয়েও আমি কনসার্ন নই। ওর কেবল একটা ইনিংসের অপেক্ষা।’

ভারতে বাংলাদেশ দল অনেক অস্বস্তি সঙ্গী করে গেছে। তামিমের বিশ্বকাপ দলে না থাকা নিয়ে জল ঘোলা হয়েছে। তারপর তামিমের ভিডিও বার্তা, সাকিবের ইন্টারভিউ নিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় ছিল উত্তাপ। সব মিলে সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক মাধ্যমসহ সবখানেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স নিয়ে নানা শঙ্কার কথা চর্চা হচ্ছিল। সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে সাকিবের দল দারুণ জয়েই বিশ্বকাপ শুরু করেছে। নাফিসের কাছে বিষয়টি স্বস্তির, ‘প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স ক্রিকেটার ও দর্শকদের মধ্যে স্বস্তি এনে দিয়েছে। এই পারফরম্যান্স খুব আশা জাগাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা সবাই আফগানিস্তানের সঙ্গে জেতার প্রত্যাশা করেছিলাম। বাংলাদেশের পারফরম্যান্স প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গেছে। বাংলাদেশের বোলাররা যেভাবে ম্যাচটা ডমিনেট করেছে, ব্যাটাররা যেভাবে রানটা চেজ করেছে। ফিল্ডাররাও নিখুঁত ছিল। খুব পেশাদার পারফরম্যান্স ছিল আমাদের।’ আফগানিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিলেও ওই ম্যাচের একাদশ নিয়ে কিছুটা সমালোচনা হয়েছে।

৮ ব্যাটার ও ৫ বোলার নিয়ে বাংলাদেশ দল মাঠে নেমেছিল। এই অবস্থায় ৬ষ্ঠ বোলারের অভাব অনুভূত হয়েছে। নাফিস অবশ্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশ পারফক্টে বলেই মন্তব্য করেছেন, ‘আমাদের দলটার মধ্যে বৈচিত্র্য আছে। সাকিব ও মিরাজ দুইজনকেই আমরা প্রোপার ব্যাটার হিসেবে খেলাতে পারি, আবার বোলার হিসেবেও খেলাতে পারি। সেই কারণে আমাদের দলটাকে যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবে সাজানো সম্ভব। আমার মনে হয় নির্দিষ্ট কন্ডিশন ও নির্দিষ্ট প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশনে দেখা যাবে বাংলাদেশ দলকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে কম্বিনেশন নিয়ে খেলেছে, আমার কাছে এটা পারফেক্ট মনে হয়েছে। রিয়াদ বোলিং করেছে, শান্তর বোলিং করার অভিজ্ঞতা আছে।’ নাফিস আরও বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যদিও আমরা একটা অনুশীলন ম্যাচ খেলেছি, সেটা ভিন্ন কন্ডিশনে। ধর্মশালার কন্ডিশন সম্পূর্ণ আলাদা। যেটা আমি বললাম, আমাদের পাঁচজন পেসার আছে পাঁচ ধরনের। মিরাজ সাকিব ছাড়া নাসুম আছে, মেহেদী আছে। আমি সাধারণ দর্শক হিসেবে কেমন একাদশ হবে, সেটা নিয়ে চিন্তিত নই। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দলে অনেক অপশন আছে।

এই অপশনে টিম ম্যানেজমেন্টের আত্মবিশ্বাসও আছে।’ পেসারদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে বিবেচিত হিমাচল প্রদেশ অ্যাসোসিয়েশনের ধর্মাশালা স্টেডিয়াম। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে তেমনটা দেখা যায়নি। স্পিনাররা বেশ সহযোগিতা পেয়েছেন উইকেট থেকে। নাফিস মনে করেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের মতো উইকেট হলে বাংলাদেশের জন্যই ভালো হবে, ‘ধর্মশালার উইকেটের যে চরিত্র তাতে মনে হয়েছিল বল অনেক উঠবে, অনেক সুইং করবে, তেমনটা কিন্তু দেখি নাই। প্রথম ম্যাচে দেখেছি প্রচুর গরমও ছিল। তবে এতটুকু বলতে পারি ধর্মশালার উইকেট বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। শেষ ম্যাচের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমন উইকেট পেলে, বাংলাদেশের জন্য তা ইতিবাচকই হবে।’

ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই অলরাউন্ডস পারফরম্যান্স দেখাচ্ছেন মিরাজ। লেট অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার, টপ অর্ডার যেখানেই নামানো হোক না কেন, মিরাজ আধিপত্য দেখাচ্ছেন। মিরাজের পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি সাবেক এই ওপেনার,‘মিরাজ ব্যাটারই ছিল। জাতীয় দলে সুযোগের পর দলের প্রয়োজনে ওকে বোলিংয়ে ফোকাস করতে হয়েছে। মিরাজকে নিয়ে বাংলাদেশ দল সব সময় আত্মবিশ্বাসী ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন ওর ব্যাটিং পারফরম্যান্সটা বেরিয়ে আসছে। ও একজন প্রোপার অলরাউন্ডার; যে কিনা যেকোনও পজিশনে ব্যাটিং এবং বোলিং করতে পারে। এটা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক একটা ব্যাপার।’