জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
শ্রীমঙ্গলে পানির জন্য বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে প্রায় ৪০০ একর চাষাবাদের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। বীজতলা নষ্ট হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা প্রতিকার চেয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা ও আশীদ্রোন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বীজতলা নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক কৃষক জানান, ফটকী আশীদ্রোন সেচ প্রকল্প নামে পরিচালনা কমিটি চলতি বোরো মৌসুমে পানি দেওয়ার কথা ছিল।
প্রকল্প পরিচালনা কমিটির ইকবাল মিয়া, রুপ মিয়া ও রুবেল মিয়ার কথামতো কৃষকরা অগ্রহায়ন মাসের শেষদিকে বীজ বপন করেন। পৌষ মাসের মধ্যবর্তী সময়ে জমিতে হাল চাষ করার জন্য পানি দেওয়ার কথা।
এখন চারার বয়স প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেছে। চারার বয়স বেশি হওয়ায় জমিতে লাগানোর অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ধানের চারা শুকিয়ে হলুদ হয়ে বীজতলায় নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। আশীদ্রোন গ্রামের কৃষক মো. মইনুল ইসলাম বাবু জানান, চলতি বোরো মৌসুমে পানি কমিটি তার বাড়ীতে তিনদিন এসে মিটিং করে বলেছিলেন, তারা বোরো ধান রোপনের জন্য পানি দেওয়ার আশ্বস দেন। এবং কৃষকদের বীজ বপনের কথা বলেন।
সে অনুযায়ি কৃষক মইনুল ইসলাম বাবু ৪ মন ধানের বীজ বপন করেন। চারার বয়স দুই মাস হয়ে গেলেও পানির কোনো ব্যববস্থা হয়নি। পানির অভাবে বীজতলা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
খোশবাস গ্রামের কৃষক রোমন মিয়া জানান, চার কেয়ার বোরো আবাদে জন্য আমি এক মন ধানের বীজ বপন করি। চার কেয়ার বোরো আবাদে পানি কমিটিকে টাকা দিয়েছি। তারা আমাদের আজ কাল বলে ঘুরাচ্ছেন। এখন চারার বয়স দুই মাস। জমিতে ধানের চারা লাগানো যাবেনা।
একই গ্রামের কৃষক ফুরুক বলেন, আমি এক মন ধানের বীজ কিনে আনছি ৩ হাজার ২শ টাকা দিয়ে। জমির গালা কাটানো ২ হাজার টাকা মোট ৫হাজার ২শ টাকা খরচ করে ধানের চারা জমিতে লাগাতে পারিনি। চারার বয়স বেশি হওয়ায় এখন চারা হলুদ হয়ে মরে যাচ্ছে।
ফটকী আশীদ্রোন সেচ প্রকল্প পরিচালনা কমিটির অভিযুক্ত ইকবাল মিয়া জানান, আমরা মিটিংয়ের পর থেকে পানি দিয়ে যাচ্ছি। যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা পানি জন্য একদিনেও আমাদের বলে নাই। আমরা মানুষের সেবা করার জন্য পানি দিচ্ছি ব্যবসার জন্য নয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মহিউদ্দিন জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় আমাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ডগেটিং করতেন ফাইল। আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। তাদের বিরোদ্ধে সরকারী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবো।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, কৃষকদের খেতে পানির সমস্যা নিয়ে আমি অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের কৃষি অফিসের মাঠ কর্মী বিষয়টি দেখে এসেছেন। কৃষক ও পানি প্রদানকারীদের ডেকেছি। দুইপক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি