রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে গায়েব হয়ে যাওয়া ২৬ হাজার ৭৭৭ নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাজউক। মঙ্গলবার (২ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানিয়েছেন রাজউকের আইনজীবী ইমাম হাসান।
তিনি আদালতকে জানান, হ্যাকাররা সার্ভার থেকে নথি হ্যাক করেছিল। সব নথি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এরপর এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিকে আদেশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৯ জুলাই দিন রেখেছেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান, আর রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হাছান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
‘রাজউক থেকে ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব’ শিরোনামে গত ২৯ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। ২ জানুয়ারি প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এরপর এ বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। পাশাপাশি দুদককে অনুসন্ধান করতে বলেন।
সে অনুসারে মঙ্গলবার রাজউক একটি হলফনামা দেন। আর দুদক জানায়, তারা তিন সদস্য দিয়ে ঘটনাটি অনুসন্ধান করছে। ইতোমধ্যে কমিটির পক্ষ থেকে রাজউকের কাছে এ ব্যাপারে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজউকের হলফনামার একটি অংশে বলা হয়, গত ৬ ডিসেম্বর ম্যালিসিয়াস অ্যক্সেস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে রাজউকের কনস্ট্রাকশন পারমিট (সিপি) সিস্টেম শীর্ষক সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিডিসিএসলের ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত ২৬ হাজার ৭৭৭ নথি মুছে যায় এবং সিপি সিস্টেমটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২১ ডিসেম্বর সিস্টেমটি পুনরায় চালু করা হয়।
এ বিষয়ে ২২ ডিসেম্বর রাজউক মতিঝিল থানায় জিডি করে। পাশাপাশি ২৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে বুয়েটের সঙ্গে একটি চুক্তি করে রাজউক।
বুয়েটের তদন্ত টিম ২৯ এপ্রিল এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দেয়। শীঘ্রই বুয়েটের তদন্ত টীম চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। মুছে যাওয়া সকল ফাইল পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদনসংক্রান্ত প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের আবেদনের নথিপত্র গায়েব হয়ে গেছে। ৬ ডিসেম্বর বিষয়টি প্রথম জানতে পারে রাজউক। এটি নিছক কারিগরি ত্রুটি, নাকি এ ঘটনায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জড়িত, সে বিষয়ে এখনো অন্ধকারে রাজউক। অন্যদিকে এই বিপর্যয়ের কারণ উদঘাটনে রাজউকের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ ঘটনার তিন সপ্তাহ পরও সরকারি এই সংস্থা কোনো তদন্ত কমিটিও করেনি।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মে থেকে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহক ভবন নির্মাণের অনুমোদন পেতে আবেদন করেছিলেন।
রাজউক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এসব নথি হারিয়ে যাওয়ার কারণে ওই গ্রাহকেরা নানা রকম ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। তবে নথি গায়েবের ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম