November 30, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, September 13th, 2022, 7:48 pm

ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরলেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা

অনলাইন ডেস্ক :

এমন সকাল অনেক দিন দেখেনি কলম্বো। চরম আর্থিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটে ডুবে থাকা দেশটির প্রতিটি ভোর আসে অনিশ্চয়তার আঁধার নিয়ে। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার নতুন অধ্যায় শুরু হয় প্রতিটি সকালে। তবে মঙ্গলবার সকাল একটু ব্যতিক্রম। সঙ্কট ও সমস্যার নিত্য টানাপোড়েনের সঙ্গে এ দিন যোগ হয় আনন্দের উপলক্ষ। এশিয়া কাপ জিতে জাতীয় ক্রিকেট দল দেশে ফিরেছে বলে কথা! ক্রিকেট মাঠের বীরদের বরণ করে নেওয়ার পাশাপাশি ভালো লাগার পরশে মাখামাখি হওয়ার সুযোগ আসে সাধারণ মানুষের জন্যও। এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল দুবাই থেকে দেশে ফেরে মঙ্গলবার সকালে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাজেভাবে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করা দলটিই পরে অভাবনীয়ভাবে একের পর এক জয়ে শেষ পর্যন্ত জিতে নিয়ে ট্রফি। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় সঙ্কটের মধ্যে থাকা জাঁতি অনেক দিন পর পায় উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কাও ক্রিকেট পাগল জাতি। উৎসবের আবহেই তারা বরণ করে নেন বিজয়ী ক্রিকেটারদের। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে কলম্বোর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ক্রিকেটারদের বয়ে আনা বিমান। এক দফা সংবর্ধণা দেওয়া হয় সেখানেই। ফুলের মালায় বরণ করে নেওয়া হয় ক্রিকেটারদের। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট ও জাতীয় দলের স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সেখানে ছিল আনন্দ আয়োজন। এরপর ছাদখোলা দোতলা বাসে শহর প্রদক্ষিণের পালা। কলম্বো শহর থেকে বিমান বন্দর বেশ দূরে। তবে বিমান বন্দর থেকে বের হতেই মানুষের ভালোবাসার উষ্ণতা টের পেতে থাকেন ক্রিকেটাররা। শত শত মানুষ রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানান ক্রিকেটারদের। ক্রমে শহরের দিকে এগোতেই সংখ্যাটি শত শত থেকে রূপ নেয় হাজার হাজার মানুষের জোয়ারে। ঢোল আর বাদ্য বাজিয়ে চলতে থাকে ক্রিকেটারদের বয়ে নেওয়া বাস। রাস্তার দুই পাশে হাত নাড়িয়ে, পতাকা উড়িয়ে, চিৎকার আর স্লোগানে ক্রিকেটারদের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ করেন শ্রীলঙ্কার জনতা। কলম্বো শহরের নানা প্রান্ত প্রদক্ষিণ করে ক্রিকেটারদের এই বিজয় মিছিল। এমন সাত সকালেও ভীড় জমে যায় শহরের পথে পথে। কোথাও কোথাও বাস থামিয়ে ক্রিকেটাররা সরাসরি কথা বলেন মানুষের সঙ্গে। হাত নেড়ে, উড়ন্ত চুম্বনে, ব্যাটে আর পতাকায় অটোগ্রাফ দিয়ে তারা এঁকে দেন ভালোবাসার চিহ্ন। এভাবেই ক্রিকেট আর জীবন মিশে যায় একসঙ্গে। ক্রিকেট মাঠের ২২ গজ হয়ে ওঠে জীবনের আঙিনাও। সব দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা, যাতনা কিছুক্ষণের জন্য এক পাশে সরিয়ে ক্লান্ত-শ্রান্ত মানুষ মেতে ওঠে হাসি-আনন্দ-মজায়। বিপর্যস্ত এক জাঁতি লড়াইয়ের প্রেরণা পায় নতুন করে।